Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
আমেরিকায় রবিঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি কিনলেন দুই বাঙালি 

মঙ্গলবার

১০ জুন ২০২৫


২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২,

১৩ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

আমেরিকায় রবিঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি কিনলেন দুই বাঙালি 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ০১:০৫, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ০১:০৯, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
আমেরিকায় রবিঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি কিনলেন দুই বাঙালি 

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা (০৪ সেপ্টেম্বর): প্রায় ১১০ বছর আগে বাড়িটিতে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকেছিলেন। নোবেলজয়ী ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদ ওই বাড়িতে বসেই লেখা হয়েছিল। রবিঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত সেই বাড়িটির অধিকারী এখন কাজল মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী দত্ত রায় নামের দুই বাঙালি। সম্প্রতি আমেরিকার আর্বানা-শ্যাম্পেনে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতর অবস্থিত বাড়িটি তারা কিনেছেন।

আজ শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকাতে এ বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাড়িটি তিনতলা সাদা রঙের। পুরনো বাড়ির ধাঁচে তৈরি। কাজল-মৌসুমী জানালেন, বাড়ির ভেতরটাও খুবই সুন্দর। একটা পুরনো পুরনো ব্যাপার লেপ্টে আছে বাড়িটার সঙ্গে। রবীন্দ্রের সময়ের বেশ কিছু জিনিসপত্রও আছে; বাথটবও। 

তারা আরও জানালেন, এই বাড়ি শুধু রবীন্দ্রনাথেরই স্মৃতিবিজড়িত নয়, এখানে থেকে কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। 

এখন কাজল মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী দত্ত রায়ের ইচ্ছা, প্রাচ্যের সঙ্গে পাশ্চাত্যের যে মেলবন্ধন রবীন্দ্রনাথ ঘটিয়েছিলেন, তা পুনরুজ্জীবিত করা। আর সে কারণেই নিউ ইয়র্কের প্রবাসী এই দুই বাঙালি আর্বানার এই বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কিত মিউজিয়াম এবং আর্কাইভ গড়ে তুলতে চান।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, ১৯০৬ সালে আর্বানায় ‘এগ্রিলাকালচার ইকনমিক্স’ নিয়ে পড়তে এসেছিলেন রথীন্দ্রনাথ। সঙ্গে সন্তোষচন্দ্র মজুমদার। তখন রবীন্দ্রনাথ কয়েক দিনের জন্য এসেছিলেন আর্বানায়। পরে তিনি ফের আসেন ১৯১২ সালে। ছিলেন টানা ছ’মাস। ১৯১৩-র এপ্রিল পর্যন্ত। তার দু বছর আগেই রথীন্দ্রনাথের বিয়ে হয়েছে প্রতিমাদেবীর সঙ্গে। তাকে সঙ্গে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ আসেন আর্বানা। ২৭ অক্টোবর, ১৯১২ নামেন নিউ ইয়র্কে। সেখান থেকে ট্রেনে শিকাগো। তার পর ঘোড়ার গাড়িতে আর্বানা। ৭ নভেম্বর, ১৯১২। 

সে সময় রবীন্দ্রনাথ তার দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথকে একটি চিঠিতে লিখছেন, ‘ভাই জ্যোতিদাদা, আমরা আমেরিকায় এসে পৌঁছেছি। সে কারণে তোমার চিঠি আসতে দেরি হয়েছে।... আমরা একটা বাড়ি ভাড়া নিয়েছি। বৌমা সেই বাড়ির কর্ত্রী। তাকেই নিজেই রান্না করতে হচ্ছে।’ চিঠির উপরে ঠিকানা লেখা— ‘৫০৮ হাই স্ট্রিট, আর্বানা, ইলিনয়, ইউএসএ’। এই বাড়িতেই টানা ছ’মাস ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এখন বাড়িটি দুই বাঙালির।

আর্বানার বাড়িটি ১৯০৩ সালে তৈরি, যা কিছু দিন আগে পর্যন্ত ছিল স্ট্যান শার্লো নামের এক আমেরিকান ভদ্রলোকের। বহু চেষ্টার পর কাজল-মৌসুমী তাকে রাজি করাতে পেরেছেন ওই বাড়ি বিক্রি করতে। কাজল জানালেন, বৃদ্ধ লোকটি প্রথমে রাজি ছিলেন না। আমরা অনেক দিন ধরেই অনুরোধ করছিলাম। শেষে তাঁর ছেলে তাঁকে রাজি করান।  

কাজল মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী দত্ত রায়। ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকার সৌজন্যে

কাজল মুখোপাধ্যায় ও মৌসুমী দত্ত রায়। ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকার সৌজন্যে

মৌসুমী দত্ত রায় জানালেন, প্রতি বছর আর্বানাতে একটা টেগোর ফেস্টিভ্যাল হয়। আমরা প্রতি বছর যেতাম। গেলেই বাড়িটা দেখতাম অবাক হয়ে। এই বাড়ির সঙ্গে এত ইতিহাস জড়িয়ে! নোবেলজয়ী গীতাঞ্জলি এখানে বসে অনূদিত হয়েছে। একটা শিহরণ জাগাত।    

এই বাড়িতে বসেই উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস, সিএস অ্যান্ডুজ, এজরা পাউন্ডসকে একাধিক চিঠি লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ। এ প্রসঙ্গে কাজল বললেন, বাড়িটা দেখলেই অদ্ভুত একটা অনুভূতি হত। বাঙালির গর্ব তো এই বাড়ি! আমেরিকার তৎকালীন লেখক, বিদ্বজ্জনেরা আসতেন এ বাড়িতে। তাঁদের মধ্যে আলোচনা হত। সাহিত্যসভা বসত। বৈঠক হতো।  

মৌসুমী জানালেন, এ বাড়ি আমাদের নয়, ভারতের সম্পত্তি। কাজল মুখোপাধ্যায় মৌসুমীর সঙ্গে যোগ করলেন, বাড়িতে একটা রাইটার্স রেসিডেন্স করার ইচ্ছে আছে। রাস্তাটার নাম ছোট ফাউন্ডেশনও করা যেতে পারে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানা জিনিস নিয়ে একটা মিউজিয়াম এবং আর্কাইভও করার ইচ্ছা। 

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়