প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমাতে শ্রীলঙ্কায় সংবিধান সংস্কারের অনুমোদন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২১ জুন): শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করতে সংবিধান সংস্কারের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে গণবিক্ষোভকে শান্ত করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের মিডিয়া উপদেষ্টা দিনুক কলম্বাজ বলেছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রেসিডেন্টের বিস্তৃত ক্ষমতাকে সীমিত করার জন্য সংবিধান সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ২১ তম সংশোধনীর এ খসড়ায় সংসদকে কিছু ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের স্বাধীনতা পুনস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
পর্যটন মন্ত্রী হারিন ফার্নান্দো এক টুইট বার্তায় বলেছেন, "২১ তম সংশোধনী আজ মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত এবং পাস করা হয়েছে।" এ প্রস্তাব এখন দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে পাস করানোর জন্য পার্লামেন্টে পাঠানো হবে।
দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ২০২০ সালের অক্টোবরে গোটাবায়া তার বড় ভাই, প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সহযোগিতায় পার্লামেন্টে সংবিধানের ২০ তম সংশোধন করেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন।
এ সংশোধনীর ফলে প্রেসিডেন্ট কোন মন্ত্রীর রাষ্ট্রপতিকে মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি মন্ত্রীদের নিয়োগ ও বরখাস্ত করার ক্ষমতা পেয়েছিলেন। এছাড়া নির্বাচন, জনসেবা, পুলিশ, মানবাধিকার এবং ঘুষ বা দুর্নীতি তদন্ত কমিশনের নিয়োগের ক্ষমতাও প্রেসিডেন্টের হাতে ছিল।
শ্রীলঙ্কায় তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সোমবার রাজধানীতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী মিছিল করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দায়ী এবং প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি।
সংকট কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাত্র এক মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রায় দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা এ বছর সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ স্থগিত করেছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর শ্রীলংঙ্কাকে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও প্রায় শেষ। এ জন্য সরকার খাদ্য, জ্বালানি ও গ্যাস আমদানি করতে পারছে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর মতো জ্বালানি না থাকায় প্রতিদিনই দীর্ঘ সময় ধরে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
কয়েক মাস ধরে মানুষজন জ্বালানি ও গ্যাস কিনতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন এবং জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে তারা এখন ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পরছেন।
এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে এবং শিক্ষকদের অনলাইনে পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে।