শনিবার

২৭ এপ্রিল ২০২৪


১৪ বৈশাখ ১৪৩১,

১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বেড়েই চলেছে কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দাম

হাসিবুল হাসান শান্ত || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ০০:৪৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
বেড়েই চলেছে কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দাম

গ্রাফিক্স:বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা (১৮ সেপ্টেম্বর): ফের বেড়েছে কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দাম। তিন মাসের মাথায় মনিটরের দামই বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ আর প্রিন্টারের দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ। দেশের আমদানিকারক, পরিবেশক এবং বিক্রেতাদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে উৎপাদন কম, চিপ সঙ্কট, অপরদিকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এসবের দাম কয়েক দফা বেড়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর ফকিরাফুলের গাউছিয়া, মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার, সুবাস্তু আর্কেড আইসিটি ভবন ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, এ বছরের এপ্রিল-জুনেও কম্পিউটারের সব যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে কারখানা বন্ধ ও লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদন বন্ধ থাকায় তখন এসব যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছিল বলে বিক্রেতারা জানিয়েছিলেন।

মনিটর:কম্পিউটারের অন্যান্য যন্ত্রাংশের থেকে মনিটরের চাহিদা বাজারে সবচেয়ে বেশি। তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পণ্য না থাকায় মনিটরের দাম বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। বাজারে প্রচলিত ১৮.৫ ইঞ্চির মনিটরে ৩,০০০ টাকা বেড়ে ১০,৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর একটি ২২ ইঞ্চির মনিটরে ৩,০০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫,০০০ টাকায়।

প্রিন্টার: অফিস-আদালতে নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় প্রিন্টারের দামও বেড়েছে ২১ শতাংশ।

ইপসন-এল৩১১০ প্রিন্টারের দাম ৪,০০০ টাকা বেড়ে ১৮,৫০০ টাকা এবং ক্যানন-১৬০৩০ প্রিন্টারে ৪,০০০ টাকা বেড়ে ১৭,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, গ্রাফিক্স কার্ডের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে প্রসেসর ও র‌্যামের দাম কিছুটা কমেছে।

প্রসেসর: বাজারে প্রচলিত ইন্টেল, এএমডি রাইজেনের প্রসেসর দুই থেকে আড়াই হাজার কমে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

র‌্যাম: নির্দিষ্ট কিছু র‌্যামের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমে ৪,০০০ হাজার থেকে ৪,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মনিটরের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার প্রসঙ্গে স্টার টেকের সেলস ও মার্কেটিংয়ের সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজার শাহাজাহান হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, ‘বৈশ্বিক বাজারে প্যানেল ও সিলিকন সঙ্কটের জন্য মনিটরের উৎপাদন কমেছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়ছে। আগামী দুই মাস এই প্যানেল সঙ্কটের জন্য মনিটর সাপ্লাইয়ে ঘাটতি হবে। এছাড়া দামও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

কম্পিউটার যন্ত্রাংশের চাহিদা নিয়ে রায়ানস কম্পিউটার্সে’র বিক্রয় কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল-কলেজ খুলেছে। এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম্পিউটার এক্সেসরিজের চাহিদা বাড়ছে।

তিনি আরও জানান, কম্পিউটারের মনিটর এবং প্রিন্টারের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ নেই। তাই দামও অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া আমদানিকারক ও পরিবেশকদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দাম দিয়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে।

একই কথা বলছেন আমদানিকারক ও পরিবেশকরা।

কম্পিউটার ও কম্পিউটার এক্সেসরিজ আমদানিকারক স্মার্ট টেকনোলজির বিক্রয় ও বিপণন ম্যানেজার আতিকুর রহমান জানান, এইচপি, ডেল প্রায় কোন ব্র্যান্ডই আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দিতে পারছে না। আর যেকোনো পণ্যের ক্ষেত্রেই ডিমান্ড বেড়ে গেলে দামও বেড়ে যায়। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি। এছাড়া কার্গো খরচ বেড়ে যাওয়ায় সেটা পণ্যের দামের সঙ্গেই যুক্ত হচ্ছে।

বাজারে চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, চাহিদা অনেক ভালো, আগে রিটেইলার হিসেবে তাদের কাছে পণ্য স্টক থাকত, কিন্তু এখন আসার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, মনিটরের দাম বৈশ্বিক বাজারে বেড়েছে, তাই দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে। মূলত কম্পিউটারের বিষয়টি একটি অন্যটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। একটার দাম বাড়লে স্বভাবতই অন্যগুলো দামও বেড়ে যায়।

বাংলাদেশের কম্পিউটার বাজার পুরোটাই আমদানি নির্ভর। এ জন্য চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানসহ বেশকিছু দেশ থেকে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়। করোনা শুরু পর থেকেই আমদানি কম হওয়ায় দাম বাড়ছে। মূলত, বৈশ্বিক বাজারে এই সময়ে কম্পিউটার যন্ত্রাংশের চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু চিপ সঙ্কটের কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়েই চলছে।

 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়