শুক্রবার

২৬ এপ্রিল ২০২৪


১৩ বৈশাখ ১৪৩১,

১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

একটি অপারেটরের একচেটিয়া আধিপত্যে বাজার প্রতিযোগিতা নষ্ট হচ্ছে: রবি

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৮ জুলাই ২০২১  
একটি অপারেটরের একচেটিয়া আধিপত্যে বাজার প্রতিযোগিতা নষ্ট হচ্ছে: রবি

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে রবি আজিয়াটার কর্মকর্তারা

ঢাকা (২৮ জুলাই): দেশের নির্দিষ্ট একটি অপারেটরের একচেটিয়া আধিপত্যে বাজার প্রতিযোগিতা নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। 

এসময় তিনি এসএমপি নিয়ন্ত্রণে ফলপ্রসূ বাস্তবায়নের অভাবের কথা উল্লেখ করে বলেন, সামগ্রিক প্রতিযোগিতামূলক ত্রুটিগুলো বাজারকে ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। প্রতিযোগিতার এমন ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট অপারেটরদের জন্য।

এখানে উল্লেখ্য, দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানী হচ্ছে গ্রামীণফোন।  

বুধবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের ফলাফল ঘোষণার সময় তিনি এসব কথা বলেন। 

মাহতাব আরও বলেন, ত্রুটিপূর্ণ মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া এবং বিতরণ ব্যবস্থা গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করছে এবং একইসাথে টেলিকম শিল্পকে দূর্বল করে ফেলছে যা ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সুষ্ঠুভাবে বাজার পরিচালনার জন্য এটি নিশ্চিত করা জরুরি যেন কোনো একক সংস্থা মূল্য নির্ধারণ ও উৎপাদন সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রভাব ফেলতে না পারে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের বাজারে উল্লেখযোগ্য একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে যার কারণে প্রতিযোগীরা উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে  নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। অথচ দেশের ভবিষ্যতের জন্য এ খাতে বিনিয়োগ জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪৭ কোটি টাকা কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) নিয়ে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষ করেছে রবি। স্থিতিশীল ঊর্ধ্বগামী রাজস্ব এবং দক্ষ ব্যয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বছরের প্রথমার্ধে অপারেটরটির পিএটি পৌঁছেছে ৮১ কোটি টাকায়। 

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় রবির ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৃদ্ধি পেয়েেছ ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় রবির ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। মোট ৫ কোটি ১৮ লাখ গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ২ কোটি গ্রাহক ফোরজি সেবার আওতায় এসেছে। এছাড়া অপারেটরটির ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন যা এ খাতে সর্বোচ্চ। গ্রাহক প্রতি মাসিক ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ এখন ৩ দশমিক ৯ জিবিতে দাঁড়িয়েছে। 

২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় এ প্রান্তিকে রবি’র গ্রাহক সংখ্যা ৮ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির গ্রাহক সংখ্যা ০ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে রবি’র মোট গ্রাহক দেশের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ। 

করোনা মহামারির কারণে লকডাউন পরিস্থিতি সত্ত্বেও চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি’র রাজস্ব আয় ২ হাজার ৩১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এটি প্রথম প্রান্তিক থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। আর গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। ভয়েস সেবা থেকে রবি’র রাজস্বের হার ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস সেবায় রাজস্ব ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।
 
অন্যদিকে ডাটা সেবায় আয় গত প্রান্তিকের তুলনায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ২১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। 

গত প্রান্তিকের তুলনায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের শেষ নাগাদ রবি’র ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৮৫৪ কোটি টাকায়। তবে ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ইবিআইটিডিএ ৩ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চলতি প্রান্তিক শেষে ইবিআইটিডিএ মার্জিন দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ১ শতাংশে। 

কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) গত প্রান্তিকের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয় প্রান্তিকে শূণ্য দশমিক ০৯ টাকা হয়েছে এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায়, ইপিএস প্রবৃদ্ধি হার ছিল ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। গঠনমূলকভাবে ইবিআইটিডিএ বৃদ্ধির ফলে স্থিরভাবে ইপিএস বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
 
ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি ৫৮৪ কোটি টাকা মূলধনী বিনিয়োগ করেছে। ১৩ হাজার ৫৪৫টি ফোরজি সাইট দিয়ে চলতি প্রান্তিক শেষ করেছে রবি। এটি ৯৮ শতাংশ জনসংখ্যার কাভারেজ নিশ্চিত করছে এবং প্রথম অপারেটর হিসেবে রবি নিজের নেটওয়ার্কে শতভাগ ফোরজি প্রযুক্তি স্থাপন করেছে। রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা যা ওই প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৫৬ শতাংশ।

করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে কোম্পানির ভূমিকার কথা উল্লেখ মাহতাব বলেন,জাতীয় কল সেন্টার ৩৩৩-তে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত, যা  কোভিড হেল্পলাইন হিসাবে নাগরিকদের সেবা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ৩৩৩ এর মাধ্যমে নাগরিকদের দ্বারপ্রান্তে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। রবি-টেন মিনিট স্কুলের মাধ্যমে আমরা প্রতিদিন সকল বয়সের ৩০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে মানসম্পন্ন শিক্ষা কন্টেন্ট সরবরাহ করছি।
 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়