শুক্রবার

২৬ এপ্রিল ২০২৪


১৩ বৈশাখ ১৪৩১,

১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পেট্রোবাংলার কাছে হাজার কোটি টাকার ভ্যাট পাওনা এনবিআরের 

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ৯ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:৪৫, ৯ ডিসেম্বর ২০২১
পেট্রোবাংলার কাছে হাজার কোটি টাকার ভ্যাট পাওনা এনবিআরের 

গ্রাফিক্স বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা (০৮ ডিসেম্বর): বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) কাছে ৮ মাসের ভ্যাট বাবদ প্রায় হাজার কোটি টাকা পাওনার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেওয়ায় সম্প্রতি শুনানির জন্য দিনক্ষণ ধার্য করেছে এনবিআর। 

মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ অনুযায়ী কর নির্ধারণের জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বর এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এনবিআরের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান। 

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার সচিব সৈয়দ আশফাকুজ্জামান বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি এমএফডি (ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন) দেখে থাকে। এ সময় তিনি এই বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। 

এ বিষয়ে এফএমডি বিভাগের মহাব্যবস্থাক গোলাম মোর্তযার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (মূল্য সংযোজন কর) কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এই চিঠি গত এক ডিসেম্বর পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপকের (এমএফডি) কাছে পাঠানো হয়। 

পেট্রোবাংলাকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত মোট ৮ মাসে মোট ভ্যাটের পরিমাণ এক হাজার ৫৪৬ কোটি ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৩৫৯ টাকা। এরমধ্যে সরকারি কোষাগারে বা ট্রেজারিতে জমা পড়েছে ৫৫২ কোটি ১৭ লাখ ৭১ হাজার ৪৩ টাকা। আর বকেয়া ভ্যাটের পরিমাণ ৯৯৪ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৩১৬ টাকা। বকেয়া এই টাকা আদায়যোগ্য।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এমতবস্থায় মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৭৩(১) অনুযায়ী কর নির্ধারণের জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এ জন্য প্রাসঙ্গিক দলিলাদি এবং লিখিত ব্যাখ্যাসহ শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। 

চিঠিতে ৮ মাসের মূসকের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে গেল বছরের ডিসেম্বরে নিট প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ১৯৫ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার ৪৪৭ টাকা। আর ট্রেজারিতে জমা হয়েছে ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৬০ টাকা। 

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৯৯ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৯৮ টাকা। আর ট্রেজারিতে জমা হয়েছে ৯৬ কোটি ৮৩ লাখ দুই হাজার ১১৪ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে ১৯৯ কোটি ৯৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮১২ টাকা। ট্রেজারিতে জমা পড়েছে ৯০ কোটি ৯৫ লাখ তিন হাজার ৪৪৬ টাকা। মার্চে ১৮৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ১১৪ টাকা। ট্রেজারিতে জমা পড়েছে ৭৭ কোটি ১৭ লাখ ৬ হাজার ৮৯৩ টাকা। এপ্রিলে ১৮৩ কোটি ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৪ টাকা। ট্রেজারিতে জমা পড়েছে ৮১ কোটি  ২৭ লাখ ৪ হাজার ৭৩৩ টাকা। 

মে মাসে ১৮০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৫ টাকা। ট্রেজারিতে জমা পড়েছে দুই কোটি ৭৭ লাখ দুই হাজার ৬১ টাকা। জুন মাসে দুই শ’ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার ৩৩৩ টাকা। ট্রেজারিতে জমা পড়েছে ৫০ কোটি ৩৮ লাখ ৮১৩ টাকা। জুলাই মাসে ২০৩ কোটি ৫৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪৬ টাকা। ট্রেজারিতে জমা পড়েছে ৯০ কোটি ২৮ লাখ চার হাজার ২২৩ টাকা। 

এখানে উল্লেখ্য, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ ৭৩ (১) এ বলা হয়েছে, ‘[কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা] নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া তৎকর্তৃক প্রদেয় করের পরিমাণ নির্ধারণ করিতে পারিবেন, যথা: (ক) যদি ২[কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা] দাখিলপত্র পরীক্ষা করিয়া দাখিলপত্রের যথার্থতা সম্পর্কে সন্তুষ্ট না হন বা যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করেন যে, (অ) কোন দাখিলপত্রে উক্ত ব্যক্তি উৎপাদন কর, সম্পূরক শুল্ক বা বৃদ্ধিকারী বা হ্রাসকারী সমন্বয়ের বিষয়ে মিথ্যা ঘোষণা বা অসত্য বর্ণনা প্রদান করিয়াছেন]; বা টার্নওভার কর দাখিলপত্রে উক্ত ব্যক্তি কোন কর মেয়াদে তাহার টার্নওভার সম্পর্কে মিথ্যা ঘোষণা প্রদান করিয়াছেন; যদি উক্ত ব্যক্তি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করিতে ব্যর্থ হন; যদি উক্ত ব্যক্তি প্রদেয় কর পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হন; বা যদি উক্ত ব্যক্তি অর্থ ফেরত লাভের বা প্রত্যর্পণ পাওয়ার অধিকারী না হওয়া সত্ত্বেও তাহার বরাবরে অর্থ ফেরত প্রদান বা প্রত্যর্পণ প্রদান করা হয়।’

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়