যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (১৬ সেপ্টেম্বর): এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া একটি ত্রিপক্ষীয় ঐতিহাসিক নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছে। চীনকে মোকাবেলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বুধবার এ ঐতিহাসিক চুক্তি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিবিসি।
বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন যৌথভাবে নতুন চুক্তির কথা ঘোষণা করেন।
চীনের কথা সরাসরি অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়নি। তবে তিন নেতাই বারবার আঞ্চলিক নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন যে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা উদ্বেগ "উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে"।
এ চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ সাবমেরিন তৈরি করতে পারবে।
অকুস প্যাক্ট খ্যাত এ চুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও সম্পৃক্ত থাকবে। বিশ্লেষকরা একে কয়েক দশকের মধ্যে তিন দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতার উদ্যোগ বলে উল্লেখ করছেন।
চীন অবশ্য এ চুক্তিকে ‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা আরও জোরদার করবে’।
ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাস তিনি দেশের এ পদক্ষেপকে ‘শীতল যুদ্ধের মানসিকতা’ বলে উল্লেখ করেছে।
এ চুক্তির ফলে ফ্রান্সের সঙ্গের বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের ১২ টি সাবমেরিন তৈরির চুক্তি ভেস্তে গেছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-ইভেস লে ড্রায়ান ফ্রান্স ইনফো রেডিওকে বলেছেন, এর মাধ্যমে সত্যিকার অর্থেই পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বিবিসিকে বলেছেন, চীন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক ব্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, "চীন ব্যপকভাবে নৌবাহিনী বিমান বাহিনী সম্প্রসারণ করছে। এসব তারা স্পষ্টত কিছু বিতর্কিত এলাকায় নিযুক্ত রয়েছে। এ অঞ্চলে আমাদের সহযোগিরাও তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছে।’
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বৃহস্পতিবার বলেছেন যে, এ চুক্তিটি ‘বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা রক্ষা করবে’ এবং ‘শত শত উচ্চ-দক্ষ চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করবে।’
তিনি আরও বলেন, ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিকই আছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিন দেশের মধ্যে এ চুক্তিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তার উদ্যোগ বলে বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন।
অতীতে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল। কিন্তু রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে।
এদিকে ফ্রান্সের সঙ্গেও এখন অস্ট্রেলিয়া উত্তেজনা বিরাজ করছে। ১২ টি সাবমেরিন তৈরির জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পাদিত ৫০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি থেকে অস্ট্রেলিয়া বেড়িয়ে গেছে।
লে ড্রায়ান বলেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক স্থাপন করেছিলাম। তারা আমাদের এ বিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’