Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দসহ তালেবান সরকারে নেতৃত্বে যারা

বুধবার

১৪ মে ২০২৫


৩১ চৈত্র ১৪৩২,

১৬ জ্বিলকদ ১৪৪৬

প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দসহ তালেবান সরকারে নেতৃত্বে যারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ২২:৪২, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দসহ তালেবান সরকারে নেতৃত্বে যারা

ছবি: প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ

ঢাকা (০৮ সেপ্টেম্বর): অগাস্ট মাসে মাত্র ১০ দিনে পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবান যোদ্ধারা বিশ্বের অনেককেই অবাক করে দিয়েছে। আফগানিস্তানকে 'ইসলামিক আমিরাত' ঘোষণা করার পর তালেবানরা মঙ্গলবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে। খবর বিবিসি।

তালেবানদের এ সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় রয়েছেন বা যার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

নতুন তালেবান সরকারে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এখানে তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো:
১. হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা: ২০১৬ সালের মে মাস থেকে তালেবানের 'সুপ্রিম লিডার' হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। তালেবান ঘোষিত তথাকথিত 'ইসলামিক এমিরেট অফ আফগানিস্তান'-এর তিনি শীর্ষ নেতা।

আশির দশকে তিনি আফগানিস্তানে সোভিয়েত দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন। তবে সামরিক কমান্ডারের তুলনায় একজন ধর্মীয় নেতা হিসাবেই তার পরিচিতি বেশি।

আখুন্দজাদা নব্বইয়ের দশকে শরিয়া আদালতের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯৬ সালে প্রথমবার তালেবান ক্ষমতায় আসার পর তালেবান তাদের মতো করে ধর্মীয় আইনকানুন চালু করে। সেই সময় হত্যাকারী ও ব্যভিচারীদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো এবং চোরদের হাত কেটে ফেলা হতো।

তখনকার তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের (ধারণা করা হয় তিনি ২০১৩ সালে মারা গেছেন) নেতৃত্বে তালেবান টেলিভিশন, সংগীত, চলচ্চিত্র নারীদের মেকআপ বা রূপসজ্জার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ১০ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে যাওয়াও তারা নিষিদ্ধ করেছিল।

হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার বয়স আনুমানিক ৬০ বছর বলে ধারণা করা হয়। তার জীবনের বেশিরভাগ সময় আফগানিস্তানে কাটিয়েছেন।

তবে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতে, তিনি তথাকথিত 'কোয়েটা শুরা'র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে আসছেন- পাকিস্তানের কোয়েটায় অবস্থান করেন বলে ধারণা রয়েছে, এমন আফগান তালেবান নেতাদের কোয়েটা শুরার সদস্য বলে মনে করা হয়।

তালেবানের সুপ্রিম লিডার হিসাবে তিনি রাজনৈতিক, সামরিক এবং ধর্মীয় সব বিষয়ের শীর্ষ নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২. প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ: ১৯৯৪ সালে যে চারজন মিলে আফগানিস্তানে তালেবান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ তাদের অন্যতম। তিনি সবচেয়ে বেশিদিন ধরে তালেবানের নেতাদের কাউন্সিল বা রেহবারি শুরার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৯৬-২০০১ সালে তালেবানের প্রথম দফার দায়িত্ব পালনের সময় তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময়ে তালেবান সরকারে দায়িত্ব পালন করার কারণে তার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

৩. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি: এই গ্রুপের আরেকজন শীর্ষ নেতা হচ্ছেন এফবিআইয়ের 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় থাকা সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা জালালুদ্দিন হাক্কানির মৃত্যুর পর ছেলে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি নেটওয়ার্কের নতুন নেতা হন। আফগানিস্তানে আফগান বাহিনী এবং তাদের পশ্চিমা মিত্রদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ কিছু হামলার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। ধারণা করা হয়, তার বয়স ৪৫ বছর।

হাক্কানি নেটওয়ার্ক হচ্ছে ওই এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ভয়াবহ জঙ্গি গ্রুপ। অনেকে মনে করেন, আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের চেয়ে তারা বেশি প্রভাবশালী।

যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় থাকা এই গ্রুপটি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে তালেবানের আর্থিক ও সামরিক সম্পদের তত্ত্বাবধান করে থাকে।

দোহার শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের আগে নিউইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত একটি মন্তব্য প্রতিবেদনে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি লিখেছেন, ‘চার দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিদিন অমূল্য আফগান জীবন ঝরে যাচ্ছে। প্রত্যেকে এমন কাউকে হারিয়েছে যাকে তারা ভালোবাসতো। যুদ্ধে সবাই ক্লান্ত। আমি উপলব্ধি করতে পারছি, পরস্পরকে হত্যা বা আহত করা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’

৪. উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার: মোল্লা আবদুল গনি বারাদার তালেবানের একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর অভিযানে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি তাদের একজন প্রধান ব্যক্তিতে পরিণত হন। তবে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান যৌথ অভিযানে তিনি করাচি থেকে গ্রেপ্তার হন।

পরবর্তী আট বছর ধরে তিনি কারাগারে বন্দী ছিলেন। দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার পর তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে কাতারের দোহায় চালু করা তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের প্রধান হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

কোন তালেবান নেতা হিসাবে ২০২০ সালে প্রথম বারাদার যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে (ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে) টেলিফোনে কথা বলেন। এর ঠিক আগে বারাদার আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের দোহা চুক্তিতে তালেবানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।

তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেবার পর ধারণা করা হয়েছিল তিনি নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে দেখা গেল তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

বারাদার ছাড়াও এ সরকারে আরো একজন উপ-প্রধানমন্ত্রী আছেন। তিনি হচ্ছেন মৌলভি আবদুল সালাম হানাফি।

৫. প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ ইয়াকুব: তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের সন্তান হচ্ছেন মোহাম্মদ ইয়াকুব। ধারণা করা হয়, তার বয়স ত্রিশ বছরের কিছু বেশি। তিনি বর্তমানে দলের সামরিক শাখার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৬ সালে তৎকালীন তালেবান নেতা আখতার মনসুর নিহত হওয়ার পর তালেবানের একটি অংশ ইয়াকুবকে তালেবানের সুপ্রিম লিডার হিসাবে মনোনীত করতে চান। তবে অন্যরা মনে করেছেন, সেই দায়িত্ব পালনে তার বয়স কম এবং অনভিজ্ঞ।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, তালেবান যখন পুরো আফগানিস্তান জুড়ে নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছিল, ইয়াকুব তালেবান যোদ্ধাদের তখন আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা আফগান সামরিক বাহিনী বা সরকারের কর্মকর্তাদের কোন ক্ষতি না করে। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ফেলে যাওয়া বাড়িঘর লুটতরাজ করা না হয়, সেই নির্দেশও তিনি দিয়েছিলেন।

তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আরও রয়েছেন:

পররাষ্ট্রমন্ত্রী: মৌলভী আমির খান মুত্তাকি

অর্থমন্ত্রী: মোল্লাহ হিদায়াত বদ্রী

বিচারমন্ত্রী: আবদুল হাকিম ইশাকজী

তথ্যমন্ত্রী: খাইরুল্লাহ সাইদউয়ালি খয়েরখা

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়