কোভিড রোগীর সফল ফুসফুস প্রতিস্থাপন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: কোভিড রোগীর সফল ফুসফুস প্রতিস্থাপন
ঢাকা (০৯ এপ্রিল): করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কারণে মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এক রোগীর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করতে সফল হয়েছেন জাপানের ডাক্তারা। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়ে তারা বলেছেন, এই প্রথমবারের মতো বিশ্বে জীবিত ডোনারের কাছ থেকে ফুসফুসের টিস্যু নিয়ে সেটি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। খবর এপি।
কিয়োটো ইউনির্ভাসিটি হসপিটাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় কানসাই এলাকার এক নারীকে ১১ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারের পর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি এখন বেশ ভাল আছেন। নিজেদের ফুসফুসের অংশ দানকারী ওই নারীর স্বামী এবং ছেলের অবস্থাও বেশ স্থিতিশীল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বে এই প্রথম জীবিত ডোনারের কাছ থেকে ফুসফুসের টিস্যু নিয়ে কোভিড ১৯ আক্রান্ত একজন রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। জাপানে ‘ব্রেন ডেড’ ডোনারের কাছ থেকে কোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করা এখনো বেশ বিরল। রোগীদের জন্য জীবিত ডোনারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অঙ্গ প্রতিস্থানের বিষয়টিকে ডাক্তারা তুলনামূলকভাবে বাস্তব সম্মত বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে থাকা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিরোশি ডেট বলেন, ‘আমরা দেখিয়েছি যে জীবিত ডেনারের কাছ থেকে আমরা এখন ফুসফুস প্রতিস্থাপনের মতো জটিল অস্ত্রোপচারও করতে সক্ষম।’ কোভিডের কারণে ফুসফুস মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এমন রোগীদের জন্য এ চিকিৎসা আলোর পথ দেখাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কিয়োটো ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং চীনে ‘ব্রেন ডেড’ ডোনারের কাছ থেকে ফুসফুসের অংশ নিয়ে কোভিড আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হচ্ছে।
সফল অস্ত্রোপচারের ওই নারী গেল বছর কোভিডে আক্রান্ত হবার পর শ্বাস নিতে সমস্যায় ছিলেন। দিনে দিনে এ অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটায় তাকে লাইফ সার্পেটে নেওয়া হয়েছিল। তার ফুসফুসের অবস্থা একেবারই খারাপ হওয়ায় তিন মাস কৃত্রিম ফুসফুসের মাধ্যমে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল।
করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তার ফুসফুস কাজ করছিল না। সেটি নিরাময়যোগ্যও ছিল না। এ অবস্থায় একমাত্র পথ ছিল তার ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা।
পরিস্থিতি বিবেচনায় তাকে বাঁচাতে স্বামী এবং ছেলে তাদের ফুসফুসের অংশ দান করতে এগিয়ে আসেন। এরপর কিয়োটো ইউনির্ভাসিটি হাসপাতালে ৩০ জনের একটি মেডিকেল টিম তাকে অস্ত্রোপচারে অংশ নেন। তার স্বামী দিয়েছেন ফুসফুসের বাম পাশের অংশ আর ছেলে দিয়েছেন ডান পাশের অংশ।
দুই মাস পরেই তিনি হসপিটাল ছেড়ে বাড়িতে চলে যেতে পারবেন। আর তিন মাস পরই তিনি আর সবার মতো দৈনন্দিন জীবনযাপন করতে পারবেন বলে হসপিটালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।