ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ ২,৬২৪ জনের মৃত্যু, দিল্লিতে জ্বলছে গণচিতা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
দিল্লিতে জ্বলছে গণচিতা। ছবি: স্কাই নিউজ
ঢাকা (২৪ এপ্রিল): করোনা অতিমারিতে দৈনিক সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মারা গেছেন ৩৪৮ জন। সব মিলিয়ে দিল্লিতে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩১ জন। খবর হিন্দুস্থান টাইমস, স্কাই নিউজ, আনন্দবাজার পত্রিকা।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৮৬ জন। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৬৬ লক্ষ ১০ হাজার ৪৮১ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। শনিবার ২ হাজার ৬২৪ মৃত্যু হওয়ায় ভারতে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৪৪ জন।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউের ধাক্কায় বেসামাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দিল্লিতে। সেখানে এ মাসেই এক দিনে সর্বোচ্চ মানুষ আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়ে চলেছে মৃত্যুও। রাজধানীতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে হাসপাতালে ভর্তি হবার সুযোগই পাচ্ছেন না করোনা আক্রান্ত অনেকে। কোভিড ওয়ার্ডে এক বিছানায় একাধিক জনকে রাখা হয়েছে। আক্রান্তকে ভর্তি করার জন্য পরিবারের লোকজন একাধিক হাসপাতালে ঘুরেও কোন সমাধান পাচ্ছেন না। কোন কোন ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার পথেই অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছেন। এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তাররাও তাদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন আমরা জীবিত রোগীদের সামাল দিতে পারছি না, মৃতদের দিকে তাকানোর সময় কোথায়?
রাজধানী দিল্লির গুরু তেজ বাহাদুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ অসুস্থ, মৃত আর অর্ধমৃতদের ভীড়ে ভারাক্রান্ত। হাসপাতাল কর্মীরা কারো মৃত্যু হলে দ্রুততার সঙ্গে মৃতদেহ ট্রলিতে করে সরিয়ে নিয়ে বিছানায় আরেকজনকে শুইয়ে দিচ্ছেন। এদের কেউ কেউ ডাক্তারের সাক্ষাত পাবার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করছেন। এ অবস্থায় স্বজনরা কাদতেও ভুলে গেছেন। কারণ মৃত্যুর পর মৃতদেহ সৎকার নিয়ে রয়েছে চরম ভোগান্তি। দিল্লিতে এখন রাতদিন চিতার ব্যবস্থা করেও কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় সেখানে গণচিতায় মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর মধ্যেই মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসাবে নেমে এসেছে অক্সিজেনের সংকট। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন। কেবলমাত্র অক্সিজেনের অভাবে দিল্লিতে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতেই শুধু অক্সিজেনের অভাবে দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হসপিটালে ২০ জন কোাভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে দিল্লির অবস্থা দেশের মধ্যে সব থেকে ভয়াবহ।
ভারতে ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার এ সংখ্যা পৌঁছে গেছে সাড়ে তিন লক্ষের কাছাকাছি। পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুও এই প্রথম আড়াই হাজার ছাড়াল। ২৪ ঘণ্টায় দু’লক্ষাধিক সুস্থ হয়ে উঠলেও গত এক সপ্তাহ ধরে সক্রিয় রোগী বেড়েছে এক লক্ষেরও বেশি।
আক্রান্ত বৃদ্ধির জেরে দেশে সক্রিয় রোগী সংখ্যাও বাড়ছে। এই বৃদ্ধি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে। শনিবার ভারতে সক্রিয় রোগী বেড়েছে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩২৪। এর জেরে দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা হয়েছে ২৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৪০।






















