সোমবার

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫


৩১ ভাদ্র ১৪৩২,

২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

মায়ানমার থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২২:১৮, ৩১ মার্চ ২০২১  
মায়ানমার থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অভ্যুত্থানের পর থেকেই মায়ানমারে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। ছবি: গার্ডিয়ান

ঢাকা (৩১ মার্চ): অতি জরুরী নয়, এমন কূটনীতিকদের মায়ানমার ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেখানে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ নির্দেশ দিয়েছে। খবর এএফপি, গার্ডিয়ান।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রতিদিনই মায়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে সামরিক বাহিনীও শক্তি প্রয়োগ করছে। ১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ ধরণের সহিংসতায় ৫২০ জনের বেশী বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।  

জান্তা সরকারের এ দমনপীড়ন সারাবিশ্বে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। বিশ্বনেতৃবৃন্দও অনতিবিলম্বে নিপীড়ন বন্ধের আহবান জানিয়েছে। কিন্তু জান্তার সরকার তাদের নীতিতে অটল থাকায় সেখানকার বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো তাদেরকে প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছে। 

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট মায়ানমারে দায়িত্বপালনকারী অতি জরুরী নন এমন কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সেখান থেকে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।   

বিশ্বের নেতৃবৃন্দ মায়ানমারের সহিংসতার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সেখানকার শীর্ষ সামরিক নেতৃবৃন্দের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। কিন্তু এ ধরণের চাপ সত্ত্বেও জান্তা সরকার মায়ানমারে তাদের তৎপরতা বন্ধ করেনি। শনিবার মায়ানমারের শসস্ত্র বাহিনী দিবসেও কমপক্ষে ১০৭জন নিহত হয়েছেন।  

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় যুক্তরাজ্যের অনুরোধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বুধবার মায়ানমার নিয়ে জরুরী অধিবেশনে বসবে বলে জানা গেছে। ১৫ সদস্যের এ রুদ্ধদ্বার বৈঠকের শুরুতেই মায়নামার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন বার্গেনার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সবাইকে অবহিত করবেন।    

মায়ানমারের অব্যাহত সহিংসতার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে সেখানকার বেশীরভাগ সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণে থাকা ২০ বা ততোধিক শসস্ত্র গ্রুপ। এর মধ্যে তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, মায়ানমার ন্যাশনালিটিজ ডেমক্র্যেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি এবং আরকান আর্মি মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সেনাবাহিনী অভিযান বন্ধ না করলে তারাও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে অংশ নেবে। 

তিনটি শসস্ত্র গ্রুপ মঙ্গলবার এ হুমকি দিলেও অন্য আরো দুটি শসস্ত্র গ্রুপ কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) এবং কোচিন ইনডেপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) গত কয়েকদিনে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে।

মায়ানমারের সবচেয়ে বড় বিদ্রোহী সংগঠন কেএনইউ পূর্বাঞ্চলীয় কেয়িন স্টেটের একটি সামরিক ঘাঁটি গেল সপ্তাহে দখল করে নিয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে সামরিক বাহিনী সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবারও সামরিক বাহিনী নতুন করে সেখানে আবারো বিমান হামলা চালিয়েছে। 

তবে কেএনইউ’র পররাষ্ট্র বিভাগের প্রধান পাডোহ স তাও নী বলেছেন, সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনতার আন্দোলনে তাদের জোরালো সমর্থন অব্যাহত থাকবে। কেএনইউ’র ফিফথ ব্রিগেড মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, সামরিক বাহিনীর যে ধরণের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তা প্রতিহত করা ছাড়া তাদের কাছে এখন আর কোন বিকল্প নেই। 

এদিকে মায়ানমারের সার্বিক পরিস্থিতি এবং মঙ্গলবারের বিমান হামলার পর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে সীমান্ত পেড়িয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষ থাইল্যান্ডে ঢুকে পড়েছে। মঙ্গলবার বিকালে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, ২ হাজার ৩০০ জনকে মায়ানমারে আবার ফেরত পাঠানো হয়েছে। ৫৫০ জন মায়ানমারের নাগরিক এখনো থাইল্যান্ডে রয়েছেন। এদিকে থাই প্রধানমন্ত্রী প্রেয়ুট চান-ও-চা জোড় দিয়ে বলেন, দেশে শরনার্থী আসার কোন ঘটনা ঘটেনি। আর থাই কর্তৃপক্ষ বন্দুক বা লাঠি দিয়ে কোন ধরণের ভয়ভীতিও প্রদর্শন করেনি। 

কারেন কর্মীরা থাই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সেখানে যাওয়া মায়ানমারের নাগরিকদের পুশব্যাক করার অভিযোগ করেছেন। এছাড়া ওই এলাকাতে জাতিসংঘের শরনার্থী কর্মকর্তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও তারা উল্লেখ করেন। 

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়