অর্থ চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার তিনজন অভিযুক্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
(বাম থেকে ডানে) জন চ্যাং হিউক, কিম ইল এবং পার্ক জিন হিউক। ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ
ঢাকা (১৮ ফেব্রুয়ারি): বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরিসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রিপ্টো এবং অন্যান্য মুদ্রার মাধ্যমে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ উত্তর কোরিয়ার তিন সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেছে।
এ তিনজনের অন্যতম পার্ক জিন হিউক নামে একজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের লস এঞ্জেলেসের ফেডারেল আদালতে মামলা করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে সনি পিকচার্স, ওয়ানাক্রাই র্যানসমওয়্যার তৈরী এবং ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল বলে এএফপি এক রিপোর্টে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ফিন্যানসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান বিজনেসইনসাইডারবিডি’কে বলেন, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের অর্থ চুরির বিষয়টি এখন সিআইডি তদন্ত করছে। তিনি বলেন, অর্থ উদ্ধার করতে নিউ ইয়র্কের আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এ মূহুর্তে এর চেয়ে বেশি আমরা জানাতে পারছি না।
নতুন অভিযোগে জন চ্যাং হিউক এবং কিম ইল নামে দুজনকে যুক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এ তিনজনের বিরুদ্ধে সরকারের জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং এবং ম্যালওয়্যার ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘের অবরোধের কারণে উত্তর কোরিয়ার অর্থ সংকট লাঘব করতে তারা এ তৎপরতা শুরু করেছিল।
বিচার বিভাগ বলছে, সাত বছরের বেশি সময় ধরে উত্তর কোরিয়ার এ তিন কর্মকর্তা ভুয়া ক্রিপ্টোকারেন্সির আবেদন তৈরীর মাধ্যমে টার্গেট কম্পিউটারে প্রবেশ করতো। সেখান থেকে তারা বিট কয়েনের মতো বিভিন্ন কোম্পানির বিপনন এবং লেনদেনের ডিজিটাল মুদ্রা হ্যাক করতেন এবং অবরোধ এড়িয়ে তা দেশে পাঠাতে গোপনে তহবিল সংগ্রহের একটি ‘ব্যাকচেইন প্ল্যাটফর্ম’ তৈরী করেছিলেন।
অভিযোগের সম্মুখীন তিনজনই একসঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের হ্যাকিং কেন্দ্রিক রিকনিসেন্স জেনারেল ব্যুরোতে কাজ করতেন। সাইবার সিকিউরিটি মহলে এটি লেজারাস গ্রুপ নামে পরিচিত।
আগের বিভিন্ন অভিযোগ ছাড়াও এ তিন জনের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার বাইরে রাশিয়া, এবং চীনে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। সেখানে তারা স্পেয়ারফিশিং টেকনিক ব্যবহার করে কম্পিউটার হ্যাক করতেন এবং বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাপলিকেশনের প্রচার চালাতেন। এভাবে তারা ভিকটিমের ক্রিপ্টোভান্ডার খালি করে দিতেন।
এএফপির রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, স্লোভেনিয়া এবং ইন্দোনেশিয়াতে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল মুদ্রা ডাকাতি এবং নিউ ইয়র্কের একটি এক্সচেঞ্জ থেকে ১১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
২০১৮ সালে তারা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ঢুকে ব্যাংক ইসলামি পাকিস্তানের এটিএম মেশিন থেকে ৬ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করেছে বলেও এএফপি রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।






















