ইউএস ওপেনে ইতিহাস গড়লেন ব্রিটিশ কন্যা এমা রাদুকানু
ক্রীড়া প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি সংগৃহীত
ঢাকা (সেপ্টেম্বর ১২): ইউএস ওপেনে মহিলাদের সিঙ্গলসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়লেন এমা রাদুকানু। ৬-৪, ৬-৩ ব্যবধানে প্রতিপক্ষ লেইলা ফার্নান্দেজকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন ব্রিটিশ এ তরুণী। যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বে খেলে উঠে আসা কোনও টেনিস খেলোয়াড় এর আগে গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিততে পারেননি। রাদুকানুই প্রথম।
পুরো ইউএস ওপেনে হারতে নারাজ শুধু কি তাই প্রতিপক্ষ তো বটেই, চোটের কাছেও একটি বারের জন্য মাথা নোয়ালেন না। প্লাস্টার লাগিয়ে আবার খেললেন। তাতেই গড়া হয়ে গেল ইতিহাস। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন এমা। বাছাইপর্ব পেরিয়ে এসে যে শিরোপা জেতার ইতিহাস ইউএস ওপেন টেনিসের ১৪০ বছরের ইতিহাসে নেই একটিও!
প্রতিপক্ষকে প্রথম সেটে দুইবার ব্রেক করেছিলেন। তবে দ্বিতীয় সেটে লায়লা ফিরে আসার লড়াই চালালেন। ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচালেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য বাজিমাত রাদুকানুর। রাদুকানুর জন্মও কানাডার টরন্টোয়। তার বাবা ইয়ানের জন্ম রোমানিয়ার বুখারেস্টে। মা শেনিয়াংয়ের জন্ম চিনে। রাদুকানুর কেরিয়ারে তাই দুই দেশেরই টেনিস তারকা সিমোনা হালেপ ও লি না-র প্রভাব রয়েছে।
তিন মাস আগে অভিষেক হয়েছে পুরোদস্তুর পেশাদার টেনিসে। এখনো ট্যুর পর্যায়ে তিন সেটের কোনো ম্যাচে খেলা হয়নি তার। এমনকি নারী টেনিসে ট্যুর ইভেন্টে একটা ম্যাচে জেতেনওনি। ইউএস ওপেনেই তো সরাসরি টিকিট পাননি তিনি।
তবে তাতে কী! ইতিহাস তো গড়েই ফেলেছেন ১৮ বছর বয়সী এই কিশোরী। ইউএস ওপেনের ফাইনালে লেইলাহ অ্যানি ফের্নান্দেজকে উড়িয়ে দিয়ে জিতে গেছেন শিরোপা।
ইউএস ওপেনটা যেভাবে শুরু করেছিলেন, রাদুকানু শেষটাও করলেন সেভাবেই। বেজলাইনের ভেতরে থেকেই প্রতিপক্ষ ধসিয়ে দিয়েছেন প্রতিটি ম্যাচে, পুরো টুর্নামেন্টে হারলেন না একটি সেটেও।
মাত্র প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনাল ছিল তার। কিন্তু তাতে স্নায়ুচাপের ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না তার পারফর্ম্যান্সে। বেজলাইন থেকে শাসনটা ছিল, যেমন ছিল পুরো টুর্নামেন্টেই। দারুণ ক্ষিপ্রতায় সব রক্ষণকাজও ছিল বেশ, সঙ্গে এদিন যোগ হয়েছে বার বার পাশ বদলে প্রতিপক্ষকে থিতু হতে না দেওয়াটাও।
জবাবটা দিচ্ছিলেন লেইলাহও। কিন্তু রাদুকানুর তীব্রতার কাছে শেষমেশ আর পেরে ওঠা হয়নি তার। দারুণ লড়াই শেষে প্রথম সেটটা গেল ব্রিটিশ রাদুকানুর পকেটে।
একই তীব্রতায় যখন দ্বিতীয় সেটেও ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়ে রাদুকানু, তখনই ঘটল অঘটন। ম্যাচ চলাকালীন একবার আহত হয়েছিলো রাদুকানু কিন্তু তাতে কি। কিছু সময়ের ছোট্ট একটা ব্রেক নিয়ে ফিরে এসে দারুণ টেনিস খেলেছেন তিনি। ফিরে এসে দুটো ব্রেক পয়েন্ট দিয়ে বসলেন প্রতিপক্ষকে। এরপরই একটা প্রত্যাবর্তন দেখল ফ্ল্যাশিং মিডোস। দারুণ এক শটে ব্রেক পয়েন্টটা দিলেন ঠেকিয়ে; এরপরই দুর্দান্ত ব্যাক হ্যান্ড শটে চলে গেলেন ম্যাচ পয়েন্টের দুয়ারে। শেষ শটে একটা এইস, তাতেই গড়া হয়ে গেল অজস্র ইতিহাস। ব্রিটিশ তরুণী ১৮ জয় করে বসলেন ইউএস ওপেন।
এর আগে বিশ্বের ৩৩৬ নম্বর খেলোয়াড় র্যাঙ্কিংয়ে ছিলেন রাদুকানু। গত ২৩ আগস্ট তার কেরিয়ারের সেরা র্যাঙ্কিং দাঁড়ায় ১৫০। এবার তিনি বিশ্বের প্রথম তিরিশে ঢুকে পড়তে চলেছেন। টেনিস বিশ্বে এক নতুন তারকার জন্ম হলো।