সুপার লিগ নিয়ে তোলপাড় ফুটবল বিশ্ব, নিষিদ্ধ হতে পারে তিন শীর্ষ দল
ক্রীড়া প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি সংগৃহীত: ইউরোপিয়ান সুপার লিগ
ঢাকা (এপ্রিল ২০): রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরিন্তিনো পেরেজকে সভাপতি করে রোববার (১৮ এপ্রিল) রাতে ঘোষণা এসেছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগের নতুন কমিটির। ইউরোপের শীর্ষ ১২টি ক্লাব নিয়ে এ বছরের আগস্টেই মাঠে গড়াবে নতুন এই সুপার লিগ। ইতোমধ্যেই ইউরোপিয়ান শীর্ষ ক্লাবগুলো অফিসিয়ালি এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। আর এমন ঘোষণা আসার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা।
উয়েফা জানিয়ে দিয়েছে এই নতুন লিগের সঙ্গে যুক্ত সকল ক্লাবকে প্রয়োজনে নিষিদ্ধও করা হবে। আর এই ১২টি ক্লাবের মধ্যেই আছে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের তিন সেমিফাইনালিস্ট রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসি।
এদিকে ঘনিয়ে আসছে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগও। তবে তার আগেই এই তিন ক্লাবের ওপর আসতে পারে নিষেধাজ্ঞা। এমনটাই জানিয়েছেন ড্যানিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান এবং উয়েফার সাবেক সদস্য জ্যাসপার মোলার।
মোলার মনে করেন উয়েফা যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রস্তুত আছে। এবং এই তিন ক্লাবকে চলতি মৌসুম থেকেই বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করতে পারে।
তবে এসব হুঁশিয়ারিকে তোয়াক্কা করলেন না সুপার লিগের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরিন্তিনো পেরেজ। জানিয়ে দিলেন যত যাই হোক না কেন সুপার লিগ মাঠে গড়াবেই। তিনি সঙ্গবাদমাধ্যমগুলোকে জানান, 'যখন ক্লাবগুলোর কেবল সম্প্রচার স্বত্ব ছাড়া আর কোনো উপার্জন নেই তখন সমাধান হিসেবে ফুটবলকে আরও আকর্ষণীয় করাটাই সঠিক। আমরা সমর্থকদের আরও বড় বড় ম্যাচ দেখার সুযোগ করে দিচ্ছি, যেখানে বিশ্বের সব বড় দলগুলো নিয়মিতই নিজেদের মধ্যে খেলবে।'
তিনি আরো বলেন, 'রিয়াল মাদ্রিদ অনেক টাকা লোকসান গুনেছে, আমরা অনেক খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ইংল্যান্ড ও স্পেনের শীর্ষ ক্লাবগুলো তাই এই সমাধান নিয়ে এসেছে ফুটবলকে বাঁচাতে। এই সময়ে একা রিয়াল মাদ্রিদই ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর লোকসান গুনেছে। আর এই লোকসান পোষাতে কিছুই করেনি কোনো ফুটবল কর্তৃপক্ষ।'
এদিকে ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, 'এটা আমাদের কাছে পরিস্কার। ফিফা কোনোভাবেই সুপার লিগকে অনুমোদন দিচ্ছে না। তাদের অনুমোদন দেওয়া অসম্ভব। আর এ ব্যাপারে কোনো সংশয় নেই।'
ফিফা প্রধান আরও বলেন, 'আমি ১৬ বছর উয়েফার সঙ্গে কাজ করেছি। আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি ফুটবলকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করতে। প্রত্যেকটা ক্লাবকেই দায়িত্ব নিতে হবে এবং তাদের সমর্থকদের জন্য কাজ করতে হবে। যাদের জন্য আজ ফুটবল এই পর্যায়ে তাদের জন্য কাজ করতে হবে।'
সুপার লিগের প্রতিষ্ঠাতে ১২টি ক্লাবকে সরাসরি কোনো হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করেননি ইনফান্তিনো। তবে সতর্ক করেছেন এ ব্যাপারে।
তাছাড়া ইউরোপিয়ান সুপার লিগের ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকদের একাংশ রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। লিভারপুল সমর্থকরা ক্লাব স্টেডিয়ামের সামনে ক্লাবের জার্সি পুড়িয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। আর ক্লাবের এফিটাফ লিখেও দিয়েছেন অনেকে। এদিকে সংবাদ এসেছে স্পেনের কাতালানে বার্সেলোনার সমর্থকরাও সুপার লিগের বিরোধিতা করেছেন। তারা হেতাফের বিপক্ষে ক্লাবের পরবর্তী ম্যাচে সুপার লিগ বিরোধী ব্যানার নিয়েও নাকি উপস্থিত হবে বলে জানিয়েছে কাতালান কিছু সংবাদমাধ্যম।
সব মিলিয়ে একরকম অস্থিরতা চলছে ফুটবল বিশ্বে।