Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
নৌখাতের উন্নয়নে জিসিবির ১৫ দফা সুপারিশ

বুধবার

১৮ জুন ২০২৫


৪ আষাঢ় ১৪৩২,

২০ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

নৌখাতের উন্নয়নে জিসিবির ১৫ দফা সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  
নৌখাতের উন্নয়নে জিসিবির ১৫ দফা সুপারিশ

ছবি: গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ

ঢাকা (১৮ সেপ্টেম্বর): নৌখাতের উন্নয়নে নৌদুর্ঘটনা তদন্ত, নৌযানের নকশা অনুমোদন ও অভ্যন্তরীণ মাস্টার-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষার দায়িত্ব নৌ পরিবহন অধিদপ্তর থেকে প্রত্যাহারের দাবিসহ ১৫ দফা সুপারিশ করেছে গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি)।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে জিসিবির পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাবসহ ১৫টি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। এ সময় উপস্থিত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, নৌযান মালিক ও শ্রমিক নেতাসহ বিশিষ্টজনেরা এই সুপারিশমালাকে বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী মন্তব্য করে সেগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি, স্বতন্ত্র নকশা অনুমোদন কমিটি ও অভ্যন্তরীণ মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব করেছে পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার বিষয়ক বেসরকারি সংগঠনটি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী বলেন, বিরাজমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত ও বিশ্লেষণ করে জিসিবি যেসব সুপারিশ উত্থাপন করেছে, নৌখাতের উন্নয়নের জন্য সেগুলো বাস্তবসম্মত। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে হলে নদ-নদী রক্ষা ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞ।

এই সুপারিশমালাকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদল অবিলম্বে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জিসিবির কর্মকান্ডের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ সিকদার বলেন, ১৫টি সুপারিশের সবগুলোই সময়োপযোগী। আশা করি, সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

আলোচনার শুরুতে সুপারিশগুলো উত্থাপন করেন জিসিবির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে।  
 
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল ভদ্রর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্টের (মেড) নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।

সুপারিশমালা উত্থাপনকালে আশীষ কুমার দে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ধারাবাহিক কর্মযজ্ঞ চলছে। প্রধানমন্ত্রী ও নৌ প্রতিমন্ত্রীসহ সাবেক দুই নৌমন্ত্রীর চেষ্টারও ঘাটতি নেই। তা সত্ত্বেও কাঙ্খিত উন্নয়ন এখনো হয়নি। তাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের ওপর প্রধানমন্ত্রী ও নৌ প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই সুপারিশমালা উত্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।   

১৫ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে:  
১. সমুদ্রগামী জাহাজের প্রায় ১০ হাজার নাবিকসহ অভ্যন্তরীণ নৌযানের শতভাগ শ্রমিককে অবিলম্বে করোনা-টিকা দেওয়া।    
২. যেকোনো নৌদুর্ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অভিজ্ঞ নৌস্থপতি, নৌপ্রকৌশলী, পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ, মাষ্টারমেরিনার, নৌ পরিবহনবিষয়ক গবেষক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, জ্যেষ্ঠ গণমাধ্যমকর্মী এবং নৌ মন্ত্রণালয়, নৌ অধিদপ্তর, নৌযানমালিক ও শ্রমিক সংগঠনের একজন করে প্রতিনিধির সমন্বয়ে জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন।   
৩. প্রত্যেক দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নৌ মন্ত্রণালয় ও নৌ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ।
৪. আধুনিক ও ত্রুটিমুক্ত নৌযান নির্মাণের স্বার্থে নকসা অনুমোদনের দায়িত্ব নৌ অধিদপ্তর থেকে প্রত্যাহার করে একাধিক সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র নকসা অনুমোদন কমিটি গঠন।
৫. নকসা জালিয়াতি বন্ধে ১ জুলাই ২০১৯ থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত দুই বছরে কতোগুলো নতুন জাহাজের নকসা অনুমোদন ও ‘কিল লেইং’ এর অনুমতি দেয়া হয়েছে, নামসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ।     
৬. ত্রুটিপূর্ণ নৌযান চলাচল বন্ধে যথাযথভাবে ফিটনেস পরীক্ষার জন্য শূন্যপদগুলোতে অবিলম্বে নিয়োগ দিয়ে নৌ অধিদপ্তরের ‘শিপ সার্ভেয়ার’ সংকট নিরসন ও বার্ষিক সার্ভে প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ।
৭. কোন শিপ সার্ভেয়ার কোন মাসে কতোগুলো নৌযান নিবন্ধন ও সার্ভে করছেন নামসহ সেই তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ।      
৮. দক্ষ নৌযানচালক তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিসহ এ ধরনের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ‘অভ্যন্তরীণ মাস্টারশিপ-ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা বোর্ড’ গঠন, পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কার ও পরীক্ষার্থীদের ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের নির্ধারণ।
৯. অধিদপ্তর থেকে সমুদ্রগামী নাবিকদের সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি), অভ্যন্তরীণ নৌযানচালকদের সনদ নবায়নসহ অন্যান্য সেবা ও নৌযানমালিকদের নিবন্ধন-বার্ষিক ফিটনেস সনদ পেতে অহেতুক কালক্ষেপন, অর্থব্যয় ও হয়রানি বন্ধ।
১০. নিয়ন্ত্রক সংস্থা নৌ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে পূর্ণাঙ্গ জনবল নিয়োগ, দ্রুতগতির টহলবোটসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক জলযান ও কর্মকর্তাদের জন্য গাড়ি বরাদ্দ।
১১. রাজস্ব আদায় ও নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারা দেশে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের নৌযানের সংখ্যা নির্ধারণে অবিলম্বে জাতীয় নৌশুমারীর ব্যবস্থা গ্রহণ।   
১২. নিবন্ধন ও ফিটনেসবিহীন নৌযানের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ অধিদপ্তরকে নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান। এ কাজে সহায়তার জন্য নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশকে সম্পৃক্তকরণ।
১৩. নিয়ন্ত্রক সংস্থা নৌ অধিদপ্তরের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে ‘ডুবে থাকা জাহাজের সার্ভে’র ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সিদ্ধান্তে ও নৌ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নৌ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কর্তৃক ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশ অথবা গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সরবরাহ।    
১৪. নদী খনন ও নৌপথের পলি অপসারণ কাজের গতি বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চলমান প্রকল্পগুলোর তথ্য সবিস্তারে বিআইডব্লিউটিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশ।  
১৫. বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএসহ সকল সরকারি দপ্তরের নৌযানসমূহকে হালনাগাদ সার্ভের আওতায় আনা।

 

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়