Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
শহীদ মিনারে ফকির আলমগীরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার

০৩ জুলাই ২০২৫


১৯ আষাঢ় ১৪৩২,

০৭ মুহররম ১৪৪৭

শহীদ মিনারে ফকির আলমগীরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ২৪ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২২:২৫, ২৪ জুলাই ২০২১
শহীদ মিনারে ফকির আলমগীরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জননন্দিত শিল্পী ফকির আলমগীরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়, বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা (২৪ জুলাই): ফুলে-ভালবাসায়-অশ্রুতে সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীরের প্রতি। আজ শনিবার দুপুর ১২টায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হলে সর্বস্তরের মানুষ এভাবে তাঁকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় ফকির আলমগীরের প্রতি ১ ঘণ্টাব্যাপী এ নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠিত হয়।

চলমান 'কঠোর লকডাউনের’ মাঝেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠিত হয়৷ বৃষ্টির কারণে দুপুর সোয়া ১২টায় নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি শুরু হয়৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ এখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে।

গতকার শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান প্রখ্যাত শিল্পী ফকির আলমগীর৷ এরপর তার মরদেহ হাসপাতালের হিমাঘরে রাখা হয়েছিল৷

আজ শনিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয়৷ সেখানে প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷ সেখানে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়৷

এদিকে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে বাদ যোহর খিলগাঁও মাটির মসজিদে দ্বিতীয় নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর তাঁকে খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে তাঁকে দাফন সম্পন্ন করার কাজ চলছে।

জননন্দিত এই গণসংগীত শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৮ জুলাই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল। টানা চারদিন হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। শুক্রবার (২৩ জুলাই) কার্ডিয়াক স্ট্রোক হয় করোনা আক্রান্ত ফকির আলমগীরের। পরিবারের আকুলতা ও চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শিল্পী ফকির আলমগীর ষাটের দশক থেকে সংগীতচর্চা শুরু করেন। তিনি বংশীবাদকও ছিলেন। দেশের আন্দোলন-সংগ্রামে গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন তিনি। ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে এবং ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন এই শিল্পী। উনিশ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণ-আন্দোলনে তিনি তাঁর গান দিয়ে শামিল হয়েছিলেন।

শিল্পী ফকির আলমগীর ও তাঁর সময়ের কয়েকজন শিল্পী শুরু করেছিলেন প্রথম বাংলা পপ ধারার গান। তাঁর কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

ফকির আলমগীর সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী’র প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া ‘বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদে’র সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন।

সংগীতের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘একুশে পদক’, ‘শেরেবাংলা পদক’, ‘ভাসানী পদক’, ‘তর্কবাগীশ স্বর্ণপদক’, ‘জসীমউদ্দীন স্বর্ণপদক’, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক মহাসম্মাননা’, ‘ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় পুরস্কার’ ‘কান্তকবি পদক’, ‘গণনাট্য পুরস্কার’, ‘সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অব অনার’সহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন ফকির আলমগীর। তাঁর বাবা মোহাম্মদ হাচেন উদ্দীন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা। তিনি ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

প্রখ্যাত শিল্পী ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন। তাঁর ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘যাঁরা আছেন হৃদয়পটে’ ‘আমার কথা’, সহ বেশ কয়েকটি বই রয়েছে।

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়