শুক্রবার

২৯ মার্চ ২০২৪


১৫ চৈত্র ১৪৩০,

১৯ রমজান ১৪৪৫

নারায়ণগঞ্জ পুলিশে নিয়োগ জালিয়াতি: সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান টিআইবির

ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২৩:২১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১  
নারায়ণগঞ্জ পুলিশে নিয়োগ জালিয়াতি: সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান টিআইবির

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)

ঢাকা (১৯ সেপ্টেম্বর): নারায়ণগঞ্জে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে জালিয়াতি ও সম্ভাব্য ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় জড়িত উচ্চপদস্থসহ সকলের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এ আহ্বান জানায়। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে জেলা কোটায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতি হয়েছে, যা ২০২০ সালে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এক তদন্তে উঠে এসেছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই তদন্ত রিপোর্টের তথ্যে দেখা যায়, নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলদের অন্তত ১৮ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দাখিল করে চাকরিতে নিয়োগের প্রমাণ মিলেছে। এমন কি স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণপত্র হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন পাঁচজন একই নিবন্ধন নম্বরের জমির দলিল প্রদান করেছে এবং অন্তত ১১ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২৩ দিন পর একই তারিখে, হুবহু একই মৌজা, দাগ ও খতিয়ানে একই সিএস, এসএ ও আরএস নম্বরে নিবন্ধিত জমির দলিল জমা দিয়েছে, যা আদতে অসম্ভব ও অবিশ্বাস্য! অথচ যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে গেছেন কিংবা গোপন করে ইতিবাচক রিপোর্ট প্রদান করেছেন, যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সরাসরি সম্পৃক্ততা ছাড়া সম্ভব নয় বলেই ধারণা করা যায়।

যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা অন্তত দু’জন উপ-পরিদর্শক তৎকালীন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালেও তিনি ‘মানবিক দিক’ বিবেচনায় ইতিবাচক রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছিলেন মর্মে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, পুলিশের চাকরিতে ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দাখিলের পরও মানবিক দিক বিবেচেনায় নিয়োগের কোনো নৈতিক বা আইনগত ভিত্তি ও সুযোগ নেই। তাই সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার কী উদ্দেশ্যে এমন নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে, অবিলম্বে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে তার সুরাহা হওয়া দরকার। 

একইসঙ্গে এই নিয়োগে কোনো অবৈধ অর্থের লেনদেন হয়েছিল কিনা সেটিও খতিয়ে দেখতে হবে। সংশ্লিষ্ট উচ্চপদে অধিষ্ঠিত থেকে অধস্তন কর্মকর্তাদের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেকে দায়মুক্ত প্রমাণের চেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ ও অগ্রহণযোগ্য। 

এ প্রসঙ্গে বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক ‘কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না’ মর্মে ১৪ সেপ্টেম্বর যে অঙ্গীকার করেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে টিআইবি মনে করে। 

প্রকাশিত এই ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীতে নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির বহুল প্রচারিত ‘কথিত গুজব’-এর প্রমাণ হিসেবে দেখা যেতে পারে মন্তব্য করে নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির কথা শোনা গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা স্বীকার করা হয় না। তাই নারায়ণগঞ্জের এই ঘটনা ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র’ এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না। এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে আগামীতে এই ধরনের অনিয়মের বেপরোয়া পুনরাবৃত্তি রোধ সম্ভব হবে না এবং অপরাধীরা আরও দুঃসাহসী হয়ে উঠবে; যা চূড়ান্ত বিচারে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর ওপর জনগনের বিশ্বাস ও আস্থার সংকট আরও প্রকট করবে। 

তাই অবিলম্বে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোনো রাখঢাক না করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এবং তদন্ত রিপোর্ট সর্বসমক্ষে প্রকাশ করে, দোষীদের বিভাগীয় প্রক্রিয়া ও প্রচলিত রাষ্ট্রীয় আইনে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়