আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী
‘তিন শ’ স্থানের ঘরে হাতুড়ি-শাবলের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

একাদশ জাতীয় সংসদের সমাপনী অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পিআইডি
ঢাকা (১৬ সেপ্টেম্বর): মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ৩০০টি স্থানে গৃহহীনদের দেওয়া ঘরের দরজা জানায় হাতুড়ি-শাবলের ফেলার আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এসব ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের ছবি আমার হাতে এসেছে। এসব জায়গায় দুর্নীতি হয়নি।
এ সময় তিনি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর হাতুড়ি শাবল দিয়ে ভেঙে ফেলে মিডিয়াতে অপপ্রচারের অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত কম করে হলেও ১০ লাখ মানুষকে আমি ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এবারের আশ্রয়ণ নিয়ে আমরা তদন্ত করেছি। সেখানে ৯টি জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি আমরা। আর ১০-১২টা স্থানে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মাটি ধসে ঘরগুলো পড়ে গেছে। আর প্রায় ৩০০টি স্থানের প্রতিটি ঘরের ছবি আমার কাছে। সেখানে তদন্তে দেখা গেছে, ঘরের দরজা জানালায় হাতুড়ি-শাবলের আঘাত। ফ্লোরগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইটের গাঁথুনি ও পিলার ভেঙে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটা তো দুর্নীতির জন্য হয়নি। এটা কারা করল?’
এরইমধ্যে এই নাশকতাকারীদের খোঁজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্তে নেমেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও তদন্তের পর গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আমার প্রশ্ন দুদক কেন তাদের তদন্ত বন্ধ করে দেবে? তদন্ত বন্ধ করার কথা না, তাদের সেটা চালু রাখতে হবে। তাদের জানাতে হবে যারা ঘরগুলো ভাঙল তারা কারা? তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল?’
দুদককে হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্যের কাছ থেকে জানলাম, দুদক বলেছে, আমরা তদন্ত করব কী, প্রধানমন্ত্রী যখন এ কথা বলেছেন! তো যে বা যারা ভেঙেছে তাদেরও নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য ছিল। এখানে দুদকের কর্মকর্তাদের এমন কথা বলার কথা না। এখন আমি বলব, দুদকের যে কর্মকর্তা এটা বলেছে এবার তার ব্যাপারে খোঁজ আমরা নেব। আমি দুদককে বলব, যে ৩০০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রতিটা ঘরের বিষয়ে তদন্ত করতে হবে এবং রিপোর্ট দিতে হবে। অবশ্যই দিতে হবে। গরিবদের জন্য ঘর করে দেব আর সেখান থেকে দুর্নীতি করে টাকা মেরে খাবে সেটা মানতে আমি রাজি না।’
আশ্রয়ণের ঘর যেন আর ভাঙতে না পারে সে জন্য আরও মজবুত করে ঘর নির্মাণের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ঠিক করেছি। এখন কংক্রিটের পিলার এবং স্টিলের ফ্রেম দিয়ে ঘরে করে দেব, যাতে চট করে ভেঙে ফেলতে না পারে।’
যদি জানতাম আজ প্রশ্ন উঠবে তো ছবিগুলো সঙ্গে করে নিয়ে আসতাম। আগামী সভায় নিয়ে আসব।