সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা ৪০ ভাগ বেড়েছে: ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের.ফাইল ফটো
ঢাকা (১২ সেপ্টেম্বর): সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা ৪০ ভাগ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মূলত মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের কারণে গত অর্থবছরের চাইতে এ বছর ৪০ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। সড়কের নিরাপত্তা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
রবিবার সকালে ঢাকা জোনের অধীনে নয়টি সেতু উদ্বোধন ও মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত এখন আর কোনো ফেরির দরকার নাই। পায়রাসহ সবগুলো সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থবছরে পদ্মা সেতু, গাজীপুরের বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
সারাদেশে চলমান সড়ক এবং সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালের ধীরগতি এখন পুষিয়ে দিতে হবে। চলমান নির্মাণাধীন প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পূর্ণ হলে সারাদেশে যোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে।
এ সময় ওবায়দুল কাদের যাত্রাবাড়ী সুলতানা কামাল সড়কের জনভোগান্তির কথা স্মরণ করে দিয়ে বলেন এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্বসহকারে নজর দিতে হবে। বনশ্রী-আমুলিয়া-ডেমরা সড়কটি পিপিপি ভিত্তিতে চারলেনে উন্নতিকরণ কাজ দ্রুত করার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, জমি অধিগ্রহণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজে আরও দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে।
সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক সড়ক নিরাপত্তায় অর্থায়ন করবে বলে বার বার আগ্রহ প্রকাশ করেও সময়ক্ষেপণ করছে, এমতাবস্থায় তারা যদি আবারও বিলম্ব করে তাহলে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
ঢাকা সড়ক জোনের অধীনে রবিবার বিশ্ব ইজতেমা সড়ক চার লেনে উন্নতিকরণ প্রকল্পের আওতায় দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি দৃষ্টিনন্দন কামারপাড়া সেতু, গাজীপুর সড়ক বিভাগের আওতায় ধলাগড় সেতু, পাথর ধারা সেতু, মাওনা-ফুলবাড়ীয়া-কালিয়াকৈর-ধামরাই-নবীনগর মহাসড়কে শালদহ সেতু, ফুলবাড়ীয়া সেতু, বেগুনবাড়ী সেতু এবং মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতায় বেণীপুর সেতু, ডেমরান সেতু ও শরীফবাগ সেতুসহ মোট নয়টি সেতুর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস সবুর এবং ধামরাই প্রান্তে সংসদ সদস্য বেনজির আহমদ।
প্রকল্পগুলো উদ্বোধন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে নিয়মিত ব্রিফিং করেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, কার অধীনে নির্বাচন হবে সেটা মীমাংসিত বিষয়, নির্বাচন যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী হবে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে।
নির্বাচনে কোনো পক্ষপাত হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।
নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ কমিশন ছাড়া আগামীতে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, বিএনপি নেতাদের এমন হুঁশিয়ারি জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের হুমকি প্রতিটি জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি নিয়মিতই দিয়ে আসছে, এতে নতুনত্ব নেই। বিএনপি নেতাদের এসব আস্ফালন আষাঢ়ে তর্জন গর্জন সার।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, কাকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন? এসব হুমকি- ধামকি আওয়ামী লীগকে দিয়ে লাভ নেই।
নির্বাচনী ব্যবস্থা কীভাবে জোরদার করা যায় সে নিয়ে আলোচনা হতে পারে তবে কোনো হুমকি-ধমকি দিয়ে নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়া এক সময়ে বলেছিলেন পাগল ও শিশু ছাড়া নিরপেক্ষ কেউ নাই, তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেবই বলুন, নিরপেক্ষতার সংজ্ঞা কী?
বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়, ভয় পায় জনগণকে তাই তারা নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রচার-প্রচারণা করেনা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আবার প্রচার-প্রচারণা চালালেও নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে যায় না কিংবা দুপুরের আগেই কেন্দ্র ছেড়ে চলে যায়। তাই জনগণ এখন আর বিএনপিকে বিশ্বাস করে না।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় জেতার জন্য নয়, তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করতেই নির্বাচনে অংশ নেয় বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— সংসদ সদস্য বেনজির আহমদ, সড়ক পরিবহন সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।