মঙ্গলবার

১৮ নভেম্বর ২০২৫


৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২,

২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

করোনায় ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ, উপকৃত হবে সোয়া কোটি পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২১:০১, ২৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ২১:০৪, ২৫ এপ্রিল ২০২১
করোনায় ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ, উপকৃত হবে সোয়া কোটি পরিবার

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকা (২৫ এপ্রিল): দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, কোভিড ১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ে লকডাউনের কারণে কর্মহীন মানুষের মানবিক সহায়তায় সরকার এ পর্যন্ত ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এতে প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে।

রবিবার সচিবালয়ে সার্বিক ত্রাণ বরাদ্দ ও বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি  এসব কথা জানান।

ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর ফলে বাংলাদেশে চলাচল সীমিতকরণের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সারাদেশের কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষজনের জন্য সরকার কর্তৃক গত বছর বিপুল পরিমাণ খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে কর্মহীন মানুষের মানবিক সহায়তায় সরকার এ পর্যন্ত ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্প্রতি দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনের অনুকূলে শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য আরও টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত এসব অর্থের মাধ্যমে শিশু খাদ্য ক্রয় করে তা বিতরণ করা হবে। এর ফলে প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, জিআর ক্যাশ দিয়েছি ১২১ কোটি টাকা, ভিজিএফ দিয়েছি ৪৭২ কোটি টাকা। বড় সিটি কর্পোরেশনগুলোকে ৫৭ লাখ টাকা করে, ছোট সিটি কর্পোরেশনগুলো ৩২ লাখ টাকা করে দিয়েছি। পৌরসভায় ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও টাকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়াও করোনাসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে সব সময় অর্থ বরাদ্দ/মজুদ রাখা হয়। 'এ' ক্যাটাগরি জেলার জন্য তিন লাখ টাকা, 'বি' ক্যাটাগরির জন্য আড়াই লাখ টাকা এবং 'সি' ক্যাটাগরি জেলার জন্য দুই লাখ টাকা করে সবসময় মজুদ রাখা হয় যা জেলা প্রশাসকগন যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যয় করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী অতি সম্প্রতি কর্মহীন মানুষকে আর্থিক সহায়তায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রায় ৩৫ লাখ পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যামে সরাসরি প্রান্তিক জনগষ্ঠীর মাঝে বিতরণ করা হবে। এছাড়াও হিটশকে ক্ষতিগ্রস্থ এক লাখ কৃষক পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি  বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্যাকেটজাত খাবার ক্রয় করা হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, চিরাসহ বিভিন্ন আইটেম আছে। ১০ কেজি চালসহ প্রতিটি প্যাকেটের মধ্যে প্রায় ১৭ কেজি ওজনের খাদ্য সামগ্রী থাকবে, যা দিয়ে একটি পরিবারের প্রায় এক সপ্তাহ চলবে বলে আশা করা যায়। আরও ১০ কোটি টাকার খাদ্য সামগ্রী কেনা হবে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন,  প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণের জন্য খুব শিগগিরই ৪০ কোটি টাকার ঢেউটিন কেনা হবে । টিআর/কাবিখা খাতে তৃতীয় কিস্তিতে ৯৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান থাকায় কর্মহীন মানুষ এ কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে। কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড়, এবং বন্যাসহ বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে দেশের ৬৪টি জেলার জন্য ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা পর্যাপ্ত কিনা— জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই পর্যাপ্ত নয়। কারণ যে পরিমাণ মানুষ কর্মহীন রয়েছে, তাকে সেখানে এই ৫০-৫৭ লাখ টাকা কোন অংকই না। মেয়ররা বলেছেন ৫০ লাখ না দিয়ে যদি ৫ কোটি দেন তা-ও এখানে কুলাবে না। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নগরের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলেছেন, নগরে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেশি। আমরা প্রস্তুত আছি, এটা বিতরণ করুন। আবার চাহিদা পাঠান আমরা দেব।

তিনি আরও বলেন, আমদানি, লোকাল ক্রয় এবং বোরো উৎপাদন মিলিয়ে আমরা মজুতের ক্ষেত্রে স্বস্তিকর অবস্থায় আছি। আমাদের খাদ্য সংকট হবে না। আমাদের সরকারের সামর্থ্য আছে, যতদিন প্রয়োজন আমরা এই মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন ।

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়