লকডাউনের দ্বিতীয় দিন
মানুষের চলাচল বেড়েছে, নির্দেশনা উপেক্ষিত বাজারে
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: বৃহস্পতিবার কাওরান বাজারের দুপুরের চিত্র, বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা(১৫ এপ্রিল): করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেওয়া ৮ দিনের কঠোর বিধি নিষেধের দ্বিতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার। প্রথমদিনের চাইতে এইদিন প্রধান সড়ক, হাটবাজার ও অলি-গলিতে মানুষের চলাচল বেড়েছে।
গত বুধবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় অফিস আদালত বন্ধ ছিলো। বৃহস্পতিবার সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ব্যাংক, পুঁজিবাজার, গার্মেন্টস, কল-কারখানা খোলা হয়েছে। এজন্য রাস্তায় অফিসগামীদের চলাচল বেড়েছে। এছাড়াও জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোও খোলা রয়েছে। পাশাপাশি কোন কারণ ছাড়াই ঘর থেকে বের হয়েছেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা, উত্তরা, কালশি, শেওড়াপাড়া, যাত্রাবাড়ী, পোস্তাগোলা মিরপুর-১, মিরপুর -১০,১৪সহ যেসব এলাকায় গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে, সেসব এলাকায় সকাল থেকে পোশাককর্মী ও কর্মকর্তাদের চলাচল ছিলো অনেক বেশি। এদের সকলেই মাস্ক পড়লেও শারীরিক দূরুত্ব বজায় রেখে চলাচলের নির্দেশনা মানছেন না। গার্মেন্টস গুলো থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলাচলের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও অনেক গার্মেন্টসই সেটা করেনি। ফলে অনেককে বেশি ভাড়া দিয়ে অথবা পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে পৌঁছাতে হয়েছে।
এসব এলাকায় সকাল সাতটা থেকে পোশাক কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের দলে দলে তাদের কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। শ্রমিকদের অনেকেই তাদের কারখানার আশপাশের এলাকায় বসবাস করায় তাদের পরিবহনের তেমন প্রয়োজন হয়নি। ফলে হেঁটেই কর্মস্থলের দিকে রওনা হয়েছেন। তবে যাদেও কারখানা দুরে তাদের অনেককেই নিজস্ব ব্যবস্থায় কাজে যেতে হয়েছে।
বাড্ডার একটি গার্মেন্টেসে ওয়াশিং প্লান্ট অপারেটর হিসেবে কাজ করেন রফিক উল্লাহ। পান্থপথে থাকেন। তিনি জানান, লকডাউনে কারখানা খোলা। কাউকে ছুটি দেয়নি। পরিবহনেরও ব্যবস্থা করেনি। তিনি জানান, গন্তব্যে যেতে দেড়শ টাকা ভাড়া চাইছে রিক্সাওয়ালা।
এদিকে, প্রথমদিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিনে রাস্তায় পুলিশের তৎপরতা কিছুটা কম দেখা গেছে। সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরে ভেতরে থাকা পুলিশ চেকপোস্টগুলো প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিনে কিছুটা নমনীয় ভাব রয়েছে।
প্রথম দিন যেসব চেকপোস্টে পুলিশ তৎপর ছিলো, চলাচলকারী প্রতিটি যান আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, বৃহস্পতিবার তেমনটা দেখা যায়নি। তবে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সব রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। প্রায় একই দৃশ্য রাজধানীতে প্রবেশ পথগুলোর।
লকডাউনে সবচেয়ে ভীতিকর ও উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে নগরীর হাট-বাজারগুলোতে। সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধিই এখানে উপেক্ষিত। অনেকেই বের হচ্ছেন খুচরা জিনিসপত্র এবং কাঁচাবাজারের উদ্দেশে। এদিকে, নগরীর অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজার এলাকায় লোকসমাগম সব সময়ই বেশি। বিকাল ৩টার পর এসব বাজারের বেচাকেনা বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বন্ধ হচ্ছে না।
সর্বাত্মক লকডাউনে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দেশের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে একদিনে সবোর্চ্চ মৃত্যু হয়েছে ৯৬ জনের।