মামুনুলসহ ১৭ হেফাজত নেতার বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হক
ঢাকা (০৬ এপ্রিল): গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় সংঘাত-নাশকতার ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাজধানীর পল্টন থানায় সোমবার রাতে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান। তিনি বলেন, খন্দকার আরিফুজ্জামান নামে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন। মামলায় মারধর, ভাঙচুর, গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
পল্টন থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক গণমাধ্যমকে জানান, ওই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২ থেকে ৩ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে ওই মামলার বাদী আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক। তিনি সাধারণ মুসল্লিদের পক্ষে হেফাজতের নাশকতার বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন।
মামলার অন্য অসামিরা হলেন— মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাসুদুল করিম, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, মাওলানা মুশতাকুন্নবী, মাওলানা মো. জোবায়ের, মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশে দেশি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিচ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, শাবল, রিভলবার নিয়ে এই হামলা চালানো হয়।’
সেখানে আরও বলা হয়, ‘মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ হুকুমে হেফাজতের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বাদীকে রড দিয়ে আঘাত করে। এতে তার ডান পা ভেঙে যায়। পরে অপর দুই যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকিম এবং নাসির উদ্দিন মনির লাঠি দিয়ে বাদীকে মারধর করে।’
এজাহারে বলা হয়, ‘মামুনুল হক বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে বসে বৈঠক করে সারা দেশে হামলার পরিকল্পনা করেন। যার ফলশ্রুতিতে ব্রাহ্মণবাড়ীয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের সাথে জামায়াতে ইসলামী, বিএনপির কর্মীরা ব্যাপক নাশকতা চালায়।’
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে ২৬ মার্চ ঢাকায় পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর এই সফরের বিরোধিতা করে আসছিল হেফজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। ওই দিন জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসা একদল লোক ভারত ও মোদীবিরোধী নানা স্লোগান দিতে শুরু করলে ছাত্রলীগ ও আওয়মী লীগ কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।
এ সময় সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও জল কামান ব্যবহার করে। এ সময় মোদীবিরোধীরা দুটি মোটর সাইকেলে আগুন দেয়। পুলিশের দিকে অঝোরে ঢিল ছুড়তে থাকে। ওই সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশ, সাধারণ মানুষসহ অন্তত ৬০ জন আহত হন বলে পুলিশ জানায়। ওই ঘটনায় ৫ থেকে ৬ শ’ জন ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ একটি মামলা করে।