রক্ত ঝরাতে উন্মাদ হয়ে উঠেছে সরকার : ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ফাইল ফটো)
ঢাকা(২৮ মার্চ): বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনাভাইরাসের মতো মহামারির সময় জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তায় কাজ না করে, মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে রক্ত ঝরাতে সরকার উন্মাদ হয়ে উঠেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এদেশের সাহসী জনতা অতীতেও যেমন সকল স্বৈরাচারকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারকেও তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করতে রাস্তায় নেমে এসেছে। জনগণের আন্দোলনের গণজোয়ারে অবৈধ সরকারের মসনদ অতলে তলিয়ে যাবে।
সরকারের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীসহ অন্যান্যদেও গ্রেপ্তার, দেশব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলন দমন করতে সরকারের গুলি, মধুপুরের পীর আবদুল হামিদসহ অসংখ্য মানুষকে গুলিবিদ্ধ ও আহত করা, গ্রেপ্তার এবং নিষ্ঠুর দমন-নিপীড়ণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষের কণ্ঠরোধ করতে সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। জীবন কেড়ে নিয়ে জনগণের প্রতি আজ তারা প্রতিশোধ নিচ্ছে। জনগণের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে দিশাহারা হয়ে মানুষ হত্যার মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার পুরো দেশকে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এর দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই বহন করতে হবে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি শান্ত করার পরিবর্তে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দিয়ে এবং ক্ষমতাসীন দলের মাস্তানদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে সরকার। বর্তমানে দেশের মানুষ এক জালিম সরকারের শাসনে বসবাস করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত কয়েকদিন বিশেষ করে মহান স্বাধীনতা দিবস থেকে শুরু করে গত দুই দিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম,ব্রাহ্মণবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলি, তান্ডবের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। আজও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এই নৃশংসতা ও নির্মমতার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, আজ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বিক্ষোভরত জনতার ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণে মধুপুরের পীর আবদুল হামিদসহ অসংখ্য মানুষ গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকার সাইনবোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গুলি ও সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিজ বাসাভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীকে। এছাড়া দেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভে আজ ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নুরুল হক নুরু, খুলনার যুবদল নেতা কামরুজ্জামান টুকুসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। চান্দগাঁও থানা যুবদলের আহবায়ক গোলজার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাজিদ হাসান রনি এবং চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল নেতা মো. শহীদুজ্জামান ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে।
এ সময় নিরীহ মানুষ হত্যা, দমন-নিপীড়ন এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে বিএনপি ঘোষিত আগামীকাল সোমবার দেশব্যাপী সকল মহানগরীতে এবং মঙ্গলবার সকল জেলা সদরে বিক্ষোভ/মিছিল সফল করতে জনগণ এবং বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।