Notice: Undefined index: HTTP_REFERER in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 2

Notice: Undefined index: HTTP_ACCEPT_LANGUAGE in /mnt/volume_sgp1_04/busine23n9s5der/public_html/common/config.php on line 14
শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

শুক্রবার

২২ আগস্ট ২০২৫


৭ ভাদ্র ১৪৩২,

২৭ সফর ১৪৪৭

শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৪:০৪, ১৩ মার্চ ২০২৪  
শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:  আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বৈশ্বিক মন্দা ও নানামুখী চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও শ্রমবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনীয় শ্রম সম্পর্ক তৈরির জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ৩৫০তম অধিবেশনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নের আলোকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রমক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে।

বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত রোড ম্যাপের (২০২১-২৬) আলোকে আইনগত সংস্কার, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন, শ্রম সংক্রান্ত পরিদর্শন এবং শ্রমিকদের অন্যান্য অধিকার– এ চারটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন বিলে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য শিল্পখাতে প্রয়োজনীয় শ্রমিক সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে আনা, ইউনিয়নের প্রতি অন্যায্য আচরণের শাস্তি দ্বিগুণ করা, বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করার শাস্তি তিনগুণ করা, শিশুশ্রমের শাস্তি চারগুণ করার বিধান রাখার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

তাছাড়া প্রস্তাবিত এ সংশোধনীতে বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে এবং নৌ পরিবহন খাতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও পরিচালনা সহজিকরণ, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে আপিল আবেদন সহজিকরণ সংক্রান্ত বিধান সংযুক্ত করার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। প্রস্তাবিত এ সংশোধনীতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বিভিন্ন কনভেনশনের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে বলে তিনি অধিবেশনকে অবহিত করেন। যথাযথ ত্রিপক্ষীয় আলোচনা শেষে দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব হলে জাতীয় সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে আইনের খসড়াটি উপস্থাপিত হতে পারে বলে মন্ত্রী জানান।

প্রচলিত আবেদন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি অনলাইন ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন চালু করা, প্রাক-আবেদন সেবা চালুকরণ, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণের ফলে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে গুণগত ও পরিমাণগত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। এর ফলে গত ৯ বছরে তৈরি পোশাক খাতে নিবন্ধন নয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত। তাছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনভুক্তি আবেদনের সফলতার হার গত চার বছরে ৬০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, কারখানা পরিদর্শকের পদ আড়াইগুণ বৃদ্ধি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পরিদর্শন মডিউল চালু করা, পরিদর্শকদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে কারখানা ও স্থাপনা পরিদর্শনে দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। কেবল গত ২০২৩ সালের শেষ ৬ মাসে ২০ হাজারেরও বেশি পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি তথ্য প্রদান করেন। তাছাড়া ইপিজেডগুলোতে নিজস্ব উন্নত পরিদর্শন ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরও পরিদর্শন শুরু করেছে। ছয়টি নতুন শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠার ফলে বর্তমানে মোট ১৩টি শ্রম আদালত কাজ করে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি সেল চালু করা হয়েছে, যা অদ্যাবধি প্রাপ্ত ৯০ শতাংশের বেশি সালিশ আবেদনের নিষ্পত্তি করেছে। শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিযোগ সহজে দায়ের করার জন্য সরকার কর্তৃক চালু করা হেল্পলাইন সফলভাবে কাজ করেছে বলে তিনি জানান।

ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের প্রতি বৈষম্য বন্ধের লক্ষ্যে সরকার গত তিন বছরে প্রায় ৩৬ হাজার শ্রমিক, ব্যবস্থাপক, মালিক, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। সরকার এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সালিশী অথবা বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

অধিবেশনে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থার ফলে এক্ষেত্রে সাধিত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির প্রশংসা করে আইএলও গভর্নিং বডির অধিকাংশ সদস্য বক্তব্য দেন। তারা রোডম্যাপ দ্রুত বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে সুপারভাইজরি বডিদের সংশ্লিষ্টতায় আইএলওর কারিগরি সহায়তা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মহাপরিচালক গিলবার্ট হোংবোর সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে মন্ত্রী বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন এবং এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান। মহাপরিচালক হোংবো সরকারের সদিচ্ছা ও গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। আইনমন্ত্রীর আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালক ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, শ্রম সচিব ছাড়াও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়