চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরী আর নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

বরেণ্য অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ সারাহ বেগম কবরী
ঢাকা (১৭ এপ্রিল): ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত বরেণ্য অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ সারাহ বেগম কবরী আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
কবরীর ছেলে শাকের চিশতী গণমাধ্যমের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
এর আগে হঠাৎ করে কবরী খুসখুসে কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হলে পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শে নমুনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ৫ এপ্রিল রাতে তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭ এপ্রিল রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের কথা জানান। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি না থাকায় ৮ এপ্রিল দুপুরে তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। ১৯৬৫ সালে অভিনয় করেন ‘জলছবি’ ও ‘বাহানা’য়, ১৯৬৮ সালে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘বাঁশরি’, ‘যে আগুনে পুড়ি’। ১৯৭০ সালে ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ ছবিগুলো। এছাড়া হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘রংবাজ’, ‘সারেং বউ’, ‘সুজন সখী’, ‘দেবদাস’সহ অসংখ্য কালজয়ী সিনেমা তিনি উপহার দিয়েছেন৷
কবরী অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমা পরিচালনা করেছেন। কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনাও করেছেন তিনি। মৃত্যুর আগে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কবরীর জন্ম ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে। রূপালী পর্দায় তার নাম কবরী হলেও আসল নাম ছিল মিনা পাল। তার বাবার নাম শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে কবরী মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন। কবরী প্রথমে বিয়ে করেছিলেন চিত্ত চৌধুরীকে। তার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাঁদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মৃত্যু কালে কবরী পাঁচ সন্তান রেখে গেছেন।