শুক্রবার

২৬ এপ্রিল ২০২৪


১৩ বৈশাখ ১৪৩১,

১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ফারুকের সেরা সাত সিনেমার গান

বিনোদন ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৪:৫৩, ১৫ মে ২০২৩  
ফারুকের সেরা সাত সিনেমার গান

সংগৃহীত

বিনোদন ডেস্ক: কিংবদন্তি অভিনেতা চিত্রনায়ক ফারুক প্রায় পাঁচ দশক ধরে বড় পর্দা মাতিয়েছেন। শুধু অভিনয় দিয়ে নয়, তার অভিনীত সিনেমার গান দিয়েও দর্শক হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি।

মিয়াভাই খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের পুরো নাম আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি আলাদা ভালো লাগা কাজ করায় মাত্র ২৩ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনীত সেরা সিনেমাগুলো হলো জলছবি, আবার তোরা মানুষ হ, আলোর মিছিল, লাঠিয়াল, সূর্যগ্রহণ, মাটির মায়া, নাগরদোলা, দিন যায় কথা থাকে, কথা দিলাম, মাটির পুতুল, সাহেব, ছোট মা, এতিম, ঘরজামাই, সখী তুমি কার, সুজন সখী, নয়নমনি ইত্যাদি।

 তবে দর্শক হৃদয়ে ঝড় তোলা সিনেমার মধ্যে রয়েছে সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, মিয়া ভাইয়ের মতো চলচ্চিত্র।

এসব জনপ্রিয় সিনেমার গান এখনও মানুষের মুখে মুখে। ফারুক অভিনীত কালজয়ী কিছু সিনেমার গানের মধ্যে রয়েছে-
 
১। একটাই কথা আছে বাংলাতে ... গানটিতে বন্ধু আর বন্ধুত্বের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।  বন্ধু আমার সিনেমায় ফারুক আর জাফর ইকবালের অভিনয় ছিল অসাধারণ। ইউটিউবে এ গানটি এত জনপ্রিয় যে এর ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ মিলিয়ন। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।

 
২। ওরে নীল দরিয়া...গানটি এখনও দর্শকদের নস্টালজিক করে তোলে। সারেং বউ সিনেমার এ গানের কষ্ট এখনও শ্রোতাদের হৃদয়ে নাড়া দেয়। ইউটিউবে জনপ্রিয় এ গানটির ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫.৯ মিলিয়ন। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।
 
৩। কি আছে জীবনে আমার...চিত্রনায়িকা ববিতার সঙ্গে অভিনীত জীবন সংসার সিনেমার এ গানটি দর্শকদের এখনও বিমোহিত করে তোলে। ইউটিউবে জনপ্রিয় এ গানটির ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬.৯ মিলিয়ন। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।
 
৪। তুমি আমার মনের মাঝি....গানটি দ্বৈতভাবে গেয়েছিলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন এবং এন্ড্রু কিশোর। চিত্রনায়িকা নিপা মোনালিসার সঙ্গে অভিনীত ফারুকের এই গানটি ইউটিউবে ভিউ সংখ্যা ৫.৩ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।

 
৫। সব সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা...গানটি এত জনপ্রিয় যে ফারুক-কবরী অভিনীত এ সিনেমার রিমিক্স সিনেমা করেন নব্বয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী সালমান শাহ ও শাবনূর। 
 
ইউটিউবে মূল সিনেমার গানের ভিডিওর ভিউ সংখ্যা ২০০ কে হলেও সালমান শাহ ও শাবনূরের রিমিক্স গানটির ভিউ ছাড়িয়েছে ১৫ মিলিয়ন। এ ছাড়া একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ফারুক-কবরী এই গানের সঙ্গে লিপসিং করেন। সে ভিডিওর ভিউ সংখ্যা ৫ মিলিয়নেরও বেশি ছাড়িয়েছে। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।

 
৬। চোখের জলে আমি...গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন জনপ্রিয় শিল্পী এন্ড্রু কিশোর। ঝিনুকমালা সিনেমার এ গানটির ইউটিউবে ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬.৯ মিলিয়ন। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।

 
৭। ভালোবাসি ভালোবাসি...গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী বাপ্পী লাহিড়ি আর আশা ভোসলে। ফারুক-রোজিনা জুটির এ গানটির ইউটিউবে ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১.৮ মিলিয়নেরও বেশি। গানটি দেখতে ক্লিক করুন।

 
কালের খেয়া যতই বয়ে যাক না কেন এসব কালজয়ী সিনেমা ও গানের জন্য দর্শক হৃদয়ে সারা জীবন বেঁচে থাকবেন মিয়া ভাই খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুক।
 
জনপ্রিয় এ চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টার দিকে মারা যান। তার মরদেহ আগামীকাল (মঙ্গলবার) দেশে আনা হবে বলে জানিয়েচেন তার ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ।
 
দীর্ঘ সময় ধরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ফারুক। এর মধ্যে দুবার তার মৃত্যুর গুজব ছড়ায়। নিয়‌মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২০২১ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যান ফারুক। তখন রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়লে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সিঙ্গাপুরে প্রায় চার মাস ধরে আইসিইউতে ছিলেন ফারুক। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মাস ছয়েক আগে তাকে কেবিনে নেয়া হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ফারুক।
 
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক ফারুক। মানিকগঞ্জে জন্ম হলেও তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’তে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ - এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
 
১৯৭৫ সালে তার অভিনীত 'সুজন সখী' ও 'লাঠিয়াল' সিনেমা দুটি ব্যাপক জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল হয়। ওই বছর 'লাঠিয়াল'র জন্য তিনি সেরা-পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে 'সূর্যগ্রহণ' ও 'নয়নমণি', ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের 'সারেং বৌ', আমজাদ হোসেনের 'গোলাপী এখন ট্রেনে'সহ বেশকিছু সিনেমায় 'মিয়া ভাই'খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয়। ২০১৬ সালে চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন এ অভিনেতা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়