চলে গেলেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা

ঢাকা (১০ মে): প্রখ্যাত সন্তুর-বাদক পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বিখ্যাত এই শিল্পীর প্রয়াণে ভারতের সাংস্কৃতিক মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ নানা অঙ্গনের বহু ব্যক্তি। খবর, হিন্দুস্তান টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকার।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা গত ছয় মাস ধরে কিডনি সংক্রান্ত সমস্যাসহ বেশ কিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

‘সন্তুর’নামক বাদ্যযন্ত্র কাশ্মীর উপত্যকার বাইরে খুব একটা পরিচিত ছিল না। এই বাদ্যযন্ত্রটিকে ভারতে জনপ্রিয় করে তোলেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা।

তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে মোদি এক টুইটে বলেছেন, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা জির মৃত্যুতে আমাদের সাংস্কৃতিক জগৎ আরও দরিদ্র হল। তিনি সন্তুরকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করেছিলেন। তাঁর গান আগামী প্রজন্মকে মুগ্ধ করবে। তার পরিবার ও ভক্তদের প্রতি সমবেদনা।

পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা সন্তুর বাজানোর পাশাপাশি পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সঙ্গে মিলে ‘শিব-হরি’ নামে বিভিন্ন ছবির সঙ্গীত পরিচালনাও করেন । উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে বলিউডের কালজয়ী সিনেমা ‘সিলসিলা’, ‘চাঁদনি’ ‘লমহে’ ইত্যাদি।

শিবকুমার শর্মা ১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জম্মুর একটি সম্ভ্রান্ত সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা উমা দত্ত শর্মা ছিলেন একজন নামী সংগীতশিল্পী। পাঁচ বছর বয়স থেকেই শিবকুমার তার বাবার কাছ থেকে সঙ্গীত ও তবলার প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। উমা দত্ত শর্মা সন্তুর নিয়ে অনেক গবেষণা করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন যে তার ছেলেকে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সন্তুর বাদক হিসেবে গড়ে তুলবেন। 

ওই ভাবনা থেকেই শিবকুমারকে ১৩ বছর বয়স থেকেই সন্তুরের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন তার তিনি। ১৯৫৫ সালে তৎকালীন বম্বেতে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা জীবনে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে সন্তুর বাজান। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে তাঁর সুনাম-সুখ্যাতি।