বেশিরভাগ পণ্যের দাম বৃদ্ধি, চিনির দর লাগামহীন
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (১১ সেপ্টেম্বর): রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে চিনি, ভোজ্য তেল, চাল, ডাল ও সবজির দাম। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিনির দর। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে চিনির দাম ধাপে ধাপে বেড়েই চলেছে।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে খোলা চিনি কেজিপ্রতি ৭৮ টাকা থেকে ৮০ টাকায় উঠেছে। লাল চিনি ৮৫ টাকা থেকে হয়েছে ৯০ টাকা। আর বাজারভেদে ৪-৫ টাকা বেড়ে প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৮২ টাকায়।
শনিবার সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মোহাম্মদপুর টাউনহল, কৃষি মার্কেট ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ততথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে ধাপে ধাপে খোলা সাদা চিনি বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা করে, লাল চিনি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে, এবং প্যকেট চিনি কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৫ টাকা।
চিনির দাম প্রথমে বাড়তে শুরু করে গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। ওই সপ্তাহে খোলা চিনির দাম ছিল ৬৫ টাকা, আর প্যাকেটজাত বিভিন্ন কোম্পানির চিনির দাম ছিল ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা। এবং লাল চিনি ছিল ৭৫ টাকা। জুলাই মাস থেকে প্যাকেটজাত ও লাল চিনি প্রতি মাসেই বেড়েছে ৫ টাকা করে। আর এ সময়ে খোলা চিনির দাম মোট বেড়েছে ১০ টাকা। এখন খুচরা বাজারে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়, আর প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।
সিটি গ্রুপের করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক, বিশ্বজিৎ সাহার কাছে চিনির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান এবং প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিশ্বজিৎ সাহার কাছে ফের প্রশ্ন করা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়লে তা দেশের বাজারে সঙ্গে সঙ্গে প্রভাব পড়ার কথা না, তবে কেন চিনির দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে? তিনি এ প্রশ্নের উত্তরও দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন রেখে দেন।
এদিকে চিনির দাম বাড়ায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘মায়ের দোয়া জেনারেল স্টোরে’র মালিক বাবলু মিয়া বলেন, ‘মিল মালিক আর কোম্পানিওয়ালারা দাম বাড়ায় আমাদের কিছু করার নাই।’তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।’
পরিবাগ থেকে বাজার করতে এসেছেন মোহাম্মাদ মতিউর রহমান। তিনি বলেন ‘প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি, দিন দিন আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং না করে, তবে এই দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।’
চিনির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যর দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা তেলসহ বোতলজাত ৫ লিটারের তেলে ৫ টাকা করে দাম বেড়েছে। চালের বাজারেও বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। প্রকারভেদে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকার আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া মিনিকেট এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। গত সপ্তাহে যে চিনিগুঁড়া চাল ছিল ৮০ টাকা সেটি এ সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ৯০ টাকা।
সবজির মধ্যে দাম বেড়েছে গাজর ও শসার। ৬০ টাকার গাজর ৩ দিনের ব্যবধানে এক লাফে ৪০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। শসাও ৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা।