সরকারি খাদ্যসামগ্রী পরিবহণে ৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর দাবি ঠিকাদারদের
আসিফ শওকত কল্লোল || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: সরকারি খাদ্যসামগ্রী পরিবহণে ৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর দাবি ঠিকাদারদের
ঢাকা (০৭ এপ্রিল): করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য সরকারি খাদ্যসামগ্রী পরিবহণে ৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন পরিবহন ঠিকাদাররা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ জানান।
এরই মধ্যে স্থানীয় ঠিকাদারদের ছয় সংগঠনের পরিবহণ বিল বাড়ানোর প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এসব ঠিকাদাররা বিভিন্ন বন্দর থেকে সারাদেশের খাদ্য গুদামগুলিতে সড়ক ও জলপথে খাদ্যশস্য পরিবহন করে থাকে।
এদিকে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, মহামারী করোনার সময়ে ঠিকাদারদের এ প্রস্তাব সরকার আন্তরিক ভাবে বিবেচনা করছে।
কর্মকর্তারা জানান, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। সোমবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা পরিবহন ঠিকাদারদের দাবি সক্রিয় বিবেচনা করছি।
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতির সদস্য আক্তার হোসেন বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ’কে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় খাদ্যশস্যের পরিবহনের ব্যয় এখন ১৫ হাজার টাকা। লকডাউনের সময় তা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে খাদ্যসামগ্রী পরিবহনের জন্য আমাদের প্রণোদনা দরকার।’ তিনি আরও বলেন, খাদ্যসামগ্রী পরিবহনে ৫০০ থেকে ৮০০ টি বিভিন্ন ধরণের যান ব্যবহৃত হয়। তবে এর বেশিরভাগই ভাড়া করা।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর প্রথম ঢেউ এবং পরে লকডাউন চলাকালীন পরিবহনের ব্যয় বাড়ার কারণে পরিবহন ঠিকাদাররা সমস্যায় পড়েছিলেন।
৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির কারণে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের ভাড়া বেড়ে গিয়েছিল। তখন রাস্তায় ট্রাকের দেখাও পাওয়া যেত না। এই প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা মহামারীর কারণে ভাড়ায় চালিত পরিবহন চালকরাও কাজ শেষে খাবার ও আবাসন সমস্যার শিকার হয়েছেন।
এ ছাড়া খাদ্য পরিবহন ঠিকাদারদের ছয় সংগঠনও বিভিন্ন বন্দর থেকে সারাদেশের বিভিন্ন খাদ্য গুদাম ও এলাকায় খাদ্য পরিবহনের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ১০ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ দাবি করেছে।
তাদের সেই দাবিও অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে।
২০২০ সালের মার্চ থেকে মে মাসে মহামারীর কারণে দেওয়া সাধারণ ছুটির সময়, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতি, ঢাকা জেলা খাদ্য পরিবহন সমিতি (বিভাগীয় সড়ক পরিবহন ঠিকাদার, ঢাকা / চট্টগ্রাম / রাজশাহী / খুলনা) এবং রেলপথ পরিবহন ঠিকাদার সমিতি এবং খুলনা ও বরিশালের জলপথ ঠিকাদার সমিতি খাদ্য অধিদফতরের খাদ্যশস্য সরবরাহের জন্য ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা অনুদান দাবি করেছিল। তবে তখন সেটা অনুমোদন করা হয়নি।
এখানে উল্লেখ্য, খাদ্যশস্য পরিবহনের জন্য চলতি অর্থবছরে মোট ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছে।
ছয় পরিবহন ঠিকাদার হল, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতি, রেলওয়ে ঠিকাদারের এম / এস রিমি এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা জেলা পরিবহন সমিতি (খাদ্য), খুলনা খাদ্য পরিবহন (সড়ক ও জনপথ) ঠিকাদারি সমিতি, বাংলাদেশ খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার সমিতি (বিভাগীয় সড়ক পরিবহন ঠিকাদার- চট্টগ্রাম), রাজশাহী খাদ্য পরিবহন সমিতি (সড়ক ও জনপথ)।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২ হাজার ৭২২ টি খাদ্য গুদামে দেশের খাদ্য মজুতের ক্ষমতা এখন ২১ লাখ ১৮ হাজার ৮২২ টনে দাঁড়িয়েছে।