করোনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে এডিপি বাস্তবায়ন কমেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: জাতীয় সংসদ সংগৃহীত
ঢাকা(০৪ এপ্রিল): চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এর বাস্তবায়ন এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক এক শতাংশ কম হয়েছ।
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মোট বরাদ্দের ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
রবিবার ‘বাজেট ২০২০-২০২১:দ্বিতীয় প্রান্তিক(জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন’ জাতীয় সংসদে চলমান অধিবেশনে উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানানো হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল-এর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক সংসদে এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়,২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে এনবিআর এর তথ্য অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে এনবিআর কর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট সরকারি ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা, অর্থাৎ বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় সরকারি ব্যয় ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে। করোনার প্রভাব দীর্ঘতর হওয়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারি ব্যয় প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। তবে সামনের দিনগুলোতে উক্ত ব্যয় বাড়ানোর জোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সরকারের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এর তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মোট বরাদ্দের ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। কোভিড- ১৯-এর প্রভাবে বাস্তবায়ন অগ্রগতি কিছুটা পিছিয়ে আছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে প্রবাস আয় হয়েছে ১৬ দশমিক ৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ, বিগত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় ও রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করাসহ বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম নেওয়ার কারনে প্রবাস আয়ের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে। আগামী দিনগুলোতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির এ ধারা বজায় রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উর্ধ্বমূখী প্রবনতা চলমান রয়েছে। উক্ত রিজার্ভ রেকর্ড পরিমান বেড়ে গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বও পর্য়ন্ত দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে রপ্তানি আয় ১৯ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র শূণ্য দশমিক ৩৬ শতাংশ কম। বিগত অর্থবছরের একই সময়ে এক্ষেত্রে সংকোচনের হার ছিল ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। বর্তমান অর্থবছরে রপ্তানির কিছুটা উর্ধ্বগতি করোনার প্রভাব কাটিয়ে রপ্তানি ঘুরে দাঁড়ানোর ঈঙ্গিত বহন করে।
আমদানি ব্যয় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমে তা ২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। মূলত: করোনার প্রভাবে শিল্পখাতের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কম হওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে, যা সাময়িক। এরপরও দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বর ২০১৯ এর ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ডিসেম্বর ২০২০ সময়ে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বর ২০১৯ এর ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে কমে গেল বছরের ডিসেম্বর সময়ে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে অবহিত করা হয়।