ই-কমার্সে আর চিট করার সুযোগ নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ই-কমার্স পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি: পিআইডি
ঢাকা (২২ সেপ্টেম্বর): ই-কমার্সের নামে এখন আর চিট করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিভাগের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ই-কমার্স নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর তিনি সংবাদিকদের এ কথা জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ই-কমার্সে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকার এই ব্যবসাকে বন্ধ করবে না। গত ৪ জুলাই যে নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে তার ফলে এখন আর গ্রাহকের সঙ্গে চিট করার সুযোগ নেই।’
নতুন নিয়মে পণ্য গ্রাহকের হাতে বুঝিয়ে দেওয়ার আগে গ্রাহকের টাকা বিক্রেতাদের কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই। এই নিয়ম চালু করতে দুই বছর আগেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছিল ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ই-ক্যাব।
সেই নিয়ম চালু করতে এতো বিলম্ব হলো কেন? সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে সেই প্রশ্ন করা হলেও তিনি সরাসরি এর কোনো উত্তর দেননি।
সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আলোচনায় ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাবও কেউ কেউ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা গুরুত্ব পায়নি। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ই-কমার্স দেখাশোনার জন্য একটি রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। একটি পূর্ণাঙ্গ আইন না থাকার কারণে অনেক সময় ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে যারা ব্যবসার নামে প্রতারণা করেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা যায়না। আইনটি আরও পূর্ণাঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এটা একটু সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, যারা ইতোমধ্যেই ই-কমার্সে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ই-কমার্সের নামে ব্যবসা করতে হলে এখন ইউনিক বিজনেস আইডি নিতে হবে-সেই ব্যবস্থা করা হবে। সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করতে আগামী কাল থেকেই কাজ শুরু করা হবে। অন্যদিকে এসক্রো সার্ভিসকে অটোমেটেড করা হবে।
ই-কমার্সে জালিয়াতি নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত ই-ভ্যালির বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের প্রপার্টি বিক্রি করে গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ই-ভ্যালির রাসেল জেলে আছেন। আমরা তার সম্পদের হিসাব করে দেখবো। যদি দেখি তাকে বের করা গেলে তার সম্পদ বিক্রি করে কিছু টাকা ফেরতের ব্যবস্থা হয় তাহলে সেই আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।’
ই-কমার্সের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন গত ৪ জুলাই যেই নীতিমালা চালু হয়েছে। বিশেষ করে এসক্রো সিস্টেম চালু হয়েছে। এখন কিন্তু কোনো কোম্পানি গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিজের কাছে নিয়ে আসতে পারছে না। এখন আর চিট করার কোনো সুযোগ থাকছেনা। আমরা একটা হিসাব পেয়েছি। গত জুলাই মাসের আগ পর্যন্ত ৬ হাজার কোটি টাকার মতো বেচাকেনা হয়েছে ই-কমার্সে। আর নীতিমালা চালুর পর ৪০০ কোটি কোটি টাকার অর্ডার পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অর্ডার এসক্রো সিস্টেমের মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে।