দুর্গাপূজায় ভারতে দুই হাজার টনের বেশি ইলিশ যাচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

রাজধানীর একটি আড়তে ইলিশ মাছ, ফাইল ফটো
ঢাকা (২০ সেপ্টেম্বর): চলতি বছর আসন্ন দুর্গাপূজায় ভারতে দুই হাজার মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ মাছ রপ্তানী করা হবে। এজন্য দেশের ৫২টি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অনুমতি পাওয়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৪০ মেট্রিক টন করে মোট দুই হাজার ৮০ টন ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানী করতে পারবে। সোমবার এই আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান।
তবে এসব প্রতিষ্ঠানের ইলিশ রপ্তানীর ক্ষেত্রে ৬টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে রপ্তানীর অনুমোদন কারো কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। অনুমোদিত রপ্তানীকারক ছাড়া সাব-কন্ট্রাকে রপ্তানি করা যাবে না। এই মেয়াদ আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। প্রতিটি কনসাইনমেন্ট শেষে রপ্তানি সংক্রান্ত কাগজপত্র রপ্তানী-২ অধিশাখায় জমা দিতে হবে। শুল্ক কর্তৃপক্ষ দ্বারা রপ্তানিকৃত পন্যের কায়িক পরীক্ষা করাতে হবে এবং রপ্তানী নীতি ২০১৮- ২০২১ এর বিধি বিধান অনুসরন করতে হবে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ প্রসঙ্গে বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে কুটনৈতিক সর্ম্পকের কারণে দুর্গাপূজার আগে ইলিশ মাছ পাঠানো হচ্ছে। এবার গতবারের চেয়ে বেশি ইলিশ ভারতে রপ্তানী করা হচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত দিয়ে ইলিশ চোরাচালন কমবে বলে তিনি মনে করেন।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ২০০০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা রফতানির অনুমোদন না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ফলে ইলিশ রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি শাখার উপসচিব তানিয়া ইসলাম রপ্তানিকারকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে একাধিক ইলিশ রপ্তানীকারক জানান, ২০২১ সালে ইলিশ রপ্তানীকারকদের তালিকায় অপরিচিত অনেক প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। যদিও ইলিশ রপ্তানীর জন্য রপ্তানী ট্রফি অর্জন করা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করলেও তারা অনুমোদন পায়নি।
গত কয়েক বছর ধরে দেশের ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়ে আসছে সরকার। ২০২০ সালেও ১ হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে ওই সময় প্রকৃত ব্যবসায়ী ও রপ্তানীকারকরা অনুমোদন না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত রপ্তানীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভারতের ব্যবসায়ীরা একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব ইলিশ মাছ নিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন মাছ হস্তান্তর হয় না।
যশোর জেলার বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পেট্রাপোল হয়ে এসব ইলিশ ভারতে যাবে।
এখানে উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানী বন্ধ থাকলেও ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানীর অনুমোদন দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে ১ হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। চলতি বছর অনুমোদন দিয়েছে ২০৮০ টন।