আলোকসজ্জার বাতি ব্যবসায় চরম মন্দা
হাসিবুল হাসান শান্ত || বিজনেস ইনসাইডার

গ্রাফিক্স:বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (১৮ সেপ্টেম্বর): ঝারবাতি বা ঘর সাজানোর লাইট যেমনি ঘর আলোয় ভরে দেয় তেমনি আনে বাড়তি সৌন্দর্যের ছোঁয়া। তবে এর ব্যবসা এখন আর ঝারবাতির মতো ঝলমলে নেই। এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরাও করোনার ভয়াল থাবায় পড়েছেন। এ ব্যবসার প্রদীপ অনেকটাই নিভু নিভু।
অধিকাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারনে সামগ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থাই শোচনীয়। ফলে মানুষের মাঝে সৌখিনতা থাকলেও তারা এখন সেটি প্রকাশ করতে পারছেন না। এভাবে চলতে থাকলে অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।
বাংলাদেশ লাইটিং অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, পুরানা পল্টনে আনুমানিক ৫৫ থেকে ৬০ টি লাইটের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া সব দোকানই চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। এসব দোকানে বেচাকেনা ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের আগে অনেক বেচাবিক্রি হত বলে আক্ষেপের সুরে বলেন পুরানা পল্টন সায়মা লাইটিং প্লাসের কর্নধার মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘গেল একবছরে সবকিছুই পালটে গেছে। আমার ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় লাইটিং ব্যবসায় এরকম মন্দা কখনও দেখিনি।’
তিনি আরও জানান, গত এক বছরে তাদের বেচাবিক্রি প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছে। এমন অনেক দিন গেছে তারা একটি প্রোডাক্টও বিক্রি করতে পারেননি।
বিজয়নগর নাজলিন এন্টারপ্রাইজের মালিক কে. মো. আহসানুজ্জামানের কথায়ও হতাশার সুর। তিনি বলেন, ‘আপনি হয়ত বিশ্বাস করবেন না; আমি ব্যবসার মূলধন থেকে টাকা খরচ করছি। ব্যবসায় পরিচালনার জন্য আত্মীয়-স্বজনদের থেকে টাকা লোন করেছি।’
মাস শেষে অফিস ভাড়া, কর্মচারীর বেতন দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি ব্যাংক লোনগুলো পরিশোধ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছি।’
নিমো লাইটিংয়ের ম্যানেজার কে এম আহসানুজ্জামান বলেন, ঘর সাজানোর এসব লাইটগুলো ফ্যান্সি আইটেম। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যে অধিকাংশেরই আয় কমেছে। অনেকে হারিয়েছেন চাকরি। তাই নিত্য প্রয়োজনীর পণ্য ছাড়া এসব দোকানে এখন ক্রেতাদের দেখা মেলা ভার।
বাংলাদেশ লাইটিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইয়িদ মো. বশির উদ্দিন বলেন, ‘কিছু ব্যবসায়ী বিভিন্ন ব্যাংক এবং আত্মীয়দের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়ত আগামী এক বা দুই মাস ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে, এর বেশি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে ৫০০ পরিবার যুক্ত আছে এই ব্যবসায়ের সঙ্গে। গত দেড় বছর যাবত আমাদের এই ব্যবসা চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। এভাবে আর মাস দেড়েক চললে অনেক ব্যবসায়ীকেই ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।