ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার তাগিদ এফবিসিসিআই সভাপতির
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: এফবিসিসিআই আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অতিথিরা
ঢাকা (০৯ সেপ্টেম্বর): অনিচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের সহায়তার পাশাপাশি ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
‘বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বিষয়ে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বৃহষ্পতিবার রাজধানীর একটি হোটলে এফবিসিসিআই আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ভারতে কোভিড প্রণোদনার ৩৮ শতাংশ, থাইল্যান্ডে শতাংশ, মালয়েশিয়ায় শতাংশ অর্থ সিএসএমই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই হার মাত্র ২২ শতাংশ। রপ্তানি ও বৃহৎ খাতে প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন সন্তোষজনক হলেও, সিএমএসএমই খাতে বাস্তবায়ন হার মাত্র ৭৭ শতাংশ। এমন অবস্থায় কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে, প্রণোদনা ঋণের দ্রুত ছাড় জরুরি হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, এসএমই খাতের জন্য ‘ডেডিকেটেড ডেস্ক’ চালু, এসএমই সার্ভিস সেন্টার, নতুন ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রবর্তনসহ বাংলাদেশে ব্যাংক বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও, কোন কোন ব্যাংকে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে অনীহা দেখা যাচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ও জামানতবিহীন ঋন সুবিধা চালু ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সহজ ও সক্রিয় করারও তিনি তাগিদ দেন।
এসএমই খাতের বিকাশে টার্ম লোনের মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ থেকে ১৫ বছর ও গ্রেস পিরিয়ড দুই বছর করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকা এসএমইদের সংশ্লিষ্ট ট্রেডবডির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যাংক ঋণ দেয়ারও সুপারিশ করেন তিনি। এসময় তিনি সিএসএমই অর্থায়ন সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের মাস্টার সার্কুলার যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায়, সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ-এবিবির চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার জানান, প্রণোদনা ঋণের ৮০ শতাংশ ছাড় হয়েছে। এই হার আরো বাড়লে ভালো হতো বলে মনে করেন তিনি। এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকের পক্ষে র্দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দেয়া অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয়না। এজন্য দেশে বন্ড মার্কেট সংস্কৃতি গড়ে তোলা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। তবে সিএসএমই খাতে প্রণোদনা ঋণ বিতরণে এফবিসিসিআই’র সঙ্গে একযোগে কাজ করার আশ্বাস দেন এবিবি চেয়ারম্যান।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআই’র পরিচালকরা। ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ীদের আলোচনায় প্রণোদনা ঋণ গ্রহণ ও বিতরণে নানা সমস্যার কথা উঠে আসে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান করে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে চান আলোচকরা।
মত বিনিময় সভায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবিব উল্লাহ ডন, এম এ রাজ্জাক খান রাজ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।