বিপণিবিতানে ভিড় বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিধিতে বেশ অবহেলা
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোতে বেড়েছে ভিড়, তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বেশ অনীহা দেখা গেছে
ঢাকা (২৫ এপ্রিল): ১১ দিন বন্ধ থাকার পর সারাদেশে আজ রবিবার খুলেছে দোকানপাট ও শপিংমলসহ সব ধরনের মার্কেট। স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্বসহ কিছু শর্ত মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৭ ঘণ্টা কেনাকাটার জন্য মার্কেট খোলা থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে সরকার।
বিপণিবিতান খুলে দেওয়ার দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সপিংমলে ঘুরে দেখা যায়, বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতা। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও শর্ত পুরোপুরি মানতে কোথায় কোথায় অবহেলা বা অনীহা দেখা গেছে। অবশ্য, বৃহৎ শপিংমলগুলোতে দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা। তবে, দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিতে সবখানেই দেখা গেছে অনীহা।
রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মল, ইস্টার্ন প্লাজাসহ বৃহৎ বিপণিবিতানগুলোতে স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ পদক্ষেপ। মার্কেটে ঢুকতে হলে জীবাণুনাশক টানেলের মধ্যে দিয়ে ধুকে পরবর্তীকালে হ্যান্ড স্যানিটাইজ করতে হচ্ছে। দুই একজন বাদে বেশিরভাগ ক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা গেছ। তবে, মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে উদাসীন।
এদিকে, নিউমার্কেট , নিউসুপার মার্কেট , চাঁদনী চক , গাউছিয়া মার্কেটে জীবাণুনাশক টানেলের ব্যবস্থা নেই। এবং সেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহিদ উল্লাহ্ শাহিদ এ বিষয়ে বলেন, আমরা মাস্কের ওপর বেশি জোর দিচ্ছি, মাস্ক না পরলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
‘জীবাণুনাশক টানেল নেই কেন’এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, টানেলের তেমন প্রয়োজন মনে করছি না, মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
দোকানগুলোতে কম-বেশি ক্রেতা থাকলেও বেশিরভাগ বিক্রেতারা আক্ষেপের সুরে জানালেন, ১১ দিন মার্কেট বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তারা লোকসানে আছেন । কর্মচারীর বেতনসহ আনুষাঙ্গিক সকল খরচ চালাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।
এলিফেন্ড রোডের ‘হানিফ সু’-এর মালিক মোহাম্মদ হানিফ বলেন, যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে পারব না। এখন পর্যন্ত বিক্রি শুরু করতে পারিনি।
গাউছিয়া মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আলমগীর উদ্দীন বলেন, আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানছি, মাস্ক পরছি স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি । তিনি আরও বলেন, ক্রেতা নাই গণপরিবহন খুলে দিলে ক্রেতা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
বিপণিবিতানগুলোতে দেখা যায়, বাবা-মায়ের সাথে কেনাকাটা করতে এসেছে ছোট ছোট বাচ্চারাও। ৪ বছরের শিশুবাচ্চাকে কোলে নিয়ে শপিং করছেন মিরপুরের বাসিন্দা সাব্বির আহমেদ। তার বাচ্চার মুখে কোনো মাস্ক নেই , পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করছেন। সাব্বির বললেন, মার্কেটে আসতে ভয় করে কিন্তু কিছু করার নাই, ছেলে মেয়েদের জন্য কেনাকাটা করতেই হবে।
পেশায় সেবিকা ঝুমা রাণী, এসেছেন রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, অনেকদিন পরে মার্কেট খুলেছে তাই এসেছি। সব-সময় রোগীদের সেবা করি তাই এখন আর ভয় করে না।
সকালে মার্কেট ও দোকান খোলার পর থেকে মানুষের উপস্থিতি যেমন বাড়তে থাকে তেমনি মার্কেটের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানেও মানুষ জমতে শুরু করে।
এদিকে, ঈদ মৌসুমে বেচাকেনা করতে এবং করোনার বিধিনিষেধের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মঙ্গলবারও দোকান ও মার্কেট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ীরা।






















