বাংলাদেশে এটোমম্যাসের রিয়াক্টর প্লান্ট পাঠানো শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: রোসাটম
ঢাকা (২০ এপ্রিল): জেএসসি এইএম টেকনোলজির ভল্গোদনস্ক শাখা (রোসাটমের যন্ত্র প্রস্তুতকারী শাখা এটোমএনার্গোম্যাস) রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়াক্টর প্লান্ট পাঠানো শুরু করেছে। মঙ্গলবার রোসাটম থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, রিয়াক্টর নির্মান প্রক্রিয়ায় ৭৬৮ টি অপারেশন এবং ১৪৩ টি কন্ট্রোলিং পয়েন্টসহ একে নির্মান করতে মোট সময় লাগে ২ বছর। এই প্লান্টের বিশেষজ্ঞগণ উপরের ইউনিটের স্ট্যান্ডার্ড কভারযুক্ত হাইড্রলিক টেস্টসহ চুল্লি পাত্রের সব ধরণের পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষা চলাকালীন সময় চুল্লির ভেতরে ২৪.৫ এমপিএ চাপ সৃষ্টি করা হয় যা অপারেটিং চাপের চেয়েও ১.৪ গুন বেশী।
যন্ত্রাংশ প্রস্তুতির শেষ ধাপ হলো আভ্যন্তরীন যন্ত্রাংশের পরীক্ষামুলক ভাবে সাজানো। নকশা অনুযায়ী কোর ব্যারেল, কোর বাফেল এবং প্রতিরক্ষামুলক টিউব ইউনিটকে চুল্লি পাত্রের ভেতরে স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ এই প্লান্টের বিশেষজ্ঞরা যন্ত্রাংশের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এর মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত এই যন্ত্রাংশের জ্যামিতিক পরিমাপ, নকশা অনুযায়ী সারি এবং গুনগত মান নিশ্চিত করা হয় ।
রিয়াক্টর ও ষ্টিম জেনারেটর প্রত্যেকটির ওজন ৩৪০ টন ও এদের দৈর্ঘে যথাক্রমে ১২ মিটার ও ১৪ মিটার। এগুলোকে প্রথমে প্লান্টের বিশেষ বার্থে নেয়া হবে এবং সেখান থেকে যন্ত্রাংশগুলোকে জাহাজে করে জলপথে নভোরোসিস্কে নেয়া হবে। সেখান থেকে এগুলো ১৪,০০০ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে।
রিয়াক্টর প্লান্ট প্রস্তুতি অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তির একটি কাজ যার দক্ষতা বিশ্বে গুটিকয়েক দেশের আছে। জেএসসি এইম টেকনোলোজি রাশিয়ার একমাত্র কোম্পানি যা পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ষ্টিম জেনারেটিং প্লান্টের সম্পুর্ন অংশ তৈরী করে। এটোমম্যাস বছরে সর্বোচ্চ ৪ সেট যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করতে পারে। বাংলাদেশের পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ইউনিটের জন্যে জেএসসি এইম টেকনোলোজি প্রায় ৫০ ধরণের যন্ত্র প্রস্তুত করেছে। যা মধ্যে রয়েছে প্রেসার ভেসেল, আপার ইউনিট, কোর ব্যাফেল, কোর ব্যারেল, প্রটেকটিভ টিউব ইউনিট, ষ্টিম জেনারেটরের একাধিক ইউনিট, রিয়াক্টর কুল্যান্ট পাইপলাইন, রিয়াক্টর কুল্যান্ট পাম্প এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ। সর্বমোট ৪০০০ টন ওজনের যন্ত্রাংশ পাঠানো হবে।
রাশিয়ান প্রকল্প অনুযায়ী রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নকশা ও নির্মান হচ্ছে। এর নকশা ও বাস্তবায়ন করছে রোসাটম রাষ্ট্রীয় কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ। এই কেন্দ্রে মোট ২টি ইউনিটের প্রত্যেকটিতে ভিভিইআর ১২০০ রিয়াক্টর থাকছে, যার কর্মক্ষমতা থাকে ৬০ বছর এবং আরও ২০ বছর বাড়ানো যায়।