তিনদিনেও ঠিক হয়নি ইএফটি: আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেন বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: বাংলাদেশ ব্যাংক (ফাইল ফটো)
ঢাকা(১৫ এপ্রিল): তিনদিনেও ঠিক হয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেম (ইএফটি)। একইসঙ্গে আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেনও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে দেশে আন্ত-ব্যাংক লেনদেন ও চেক নিষ্পত্তি মারাত্নকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার এক নোটিশে ব্যাংকগুলোকে জানিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় চেক ক্লিয়ারিং প্রক্রিয়া এবং ইলেক্ট্রনিক তহবিল স্থানান্তর পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় থাকবে।
ব্যাংকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি টিম গত মঙ্গলবার থেকে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন সমাধান করতে পারেনি।
ব্যাংকাররা বলেছেন, করোনভাইরাস প্রতিহত করতে সারাদেশ এক সপ্তাহ কঠোর লকডাউনে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার সাধারণ দিনের চেয়ে তিনগুণ বেশি নগদ অর্থ উত্তোলনের চাপ ছিল। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমে সমস্যা হতে পারে।
আরেকটি জোরালো আশংকা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক হয়তো আরেকদফা সাইবার হামলার শিকার হয়েছে বা গত মাসে বাংলাদেশের যে ২০০ প্রতিষ্ঠানে বড় ধরণের সাইবার হামলা হয়েছিল, সেই হামলার কারণে কোন ধরণের ‘বাগ’ এখনো এর সিস্টেমে রয়ে গেছে। গত মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ১৮ টি ব্যাংক এবং আরও অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান এ হামলার শিকার হয়েছিল।
ব্যাংকাররা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি সিস্টেমের দুর্বলতার কথা বলে আসছিলেন। তবে তেমন কেউই এ বিষয়টির প্রতি কোন মনোযোগ দেননি।
একটি বেসরকারী ব্যাংকের আইটি বিভাগের প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করার সময় আমাদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বনের পাশাপাশি আরও ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে।’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন অতিরিক্ত লেনদেন সমাল দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায় না। এ ধরণের লেনদেন তো মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘অটোমেটিক চেক ক্লিয়ারিং হাউস’ কাজ না করায় চেক ক্লিয়ারিং প্রক্রিয়া এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার করতে বিভিন্ন ব্যাংকাররা বিশাল সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।
পেমেন্ট সিস্টেমের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত এক আইটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ১৮/১৯ বছরের পুরানো চেক ক্লিয়ারিং সিস্টেম ব্যবহার করে। এটি ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ করে, যা এখন আর কোনও দেশে ব্যবহৃত হয় না।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের যদি এর আইটি সিস্টেমের উন্নত না করে তবে তা একদিন বাস্ট হয়ে যাবে।
‘হ্যাকাররা এখন অত্যন্ত পরিণত, তারা এখন সাইবার আক্রমণ চালানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ’কে বলেছিলেন, একটি তার কাটা পড়েছিল এবং সেই কারণেই এ সমস্যা হয়েছিল। সরকারের আইসিটি বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্ত ররেছে। ওই আইসিটি বিভাগ বেশ কিছু বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। এ সমস্যা তাদের কাছ থেকেও হতে পারে।