প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (ফাইল ফটো)
ঢাকা(০৮ এপ্রিল): আসন্ন বাজেটে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরণের কর আরোপের বিষয়টি পূর্নবিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে সরকারের দেয়া প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানোর দাবিও করেছেন তারা।
বৃৃহস্পতিবার দেশের ১২টি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রাক বাজেট আলোচনায় ব্যবসায়ীরা এই দাবি জানান। এই আলোচনা সভা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সকল ব্যবসায়ী সংগঠনকে দাওয়াত দিয়েছিলাম। তারা সবাই উপস্থিত ছিলো। তারা তাদের মতামত, সমস্যা ও প্রাপ্তিসহ সবকিছু আমাদেরকে জানিয়েছে। মূলত যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই ট্যাক্স রিলেটেড।
তিনি বলেন, অর্থ সচিবের নেতৃত্বে বাজেট নিয়ে আমাদের যে বাজেট টিম কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের বাজেটের যে রুপরেখা আছে সেখানে তাদের পরামর্শ নিয়ে দেশের জন্য যেসব পরামর্শ উপযোগী ও কল্যাণকর ডেফিনেটলি সরকার সেগুলো বিবেচনায় নেবে। যে ধরনের দাবি এসেছে সেগুলো অযৌক্তিক বলব না, কারণ তাদের দাবির পরিমাণ তো বেশিই থাকে। আমরা কতটুকু দাবি নিতে পারব সেটি বাজেট টিম, ব্যাংক, এনবিআরসহ যারা আছে তাদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেবো।
এবার যাদের সাথে বসেছেন সেখানে মেজর দাবিগুলো কি এবং এই সময়ে তারা কি ধরনের চ্যালেঞ্জ ফেইস করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোভিড পেন্ডামিকের জন্য গত বছর প্রধানমন্ত্রী ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেখান থেকে তারা উপকৃত হয়েছে, সেটি তারা অস্বীকার করেনি। তাদের দাবি হলো যেহেতু এই করোনা এখনও আমাদেও দেশে রয়ে গেছে, সেহেতু সমস্যাগুলো তাদের এখনও মোকাবেলা করতে হচ্ছে, তাই সেটার মেয়াদ আরো বাড়ানো যায় কিনা সেটা তাদের মূল দাবি। এ সুযোগ সুবিধাগুলো তারা এখন পাচ্ছে সেগুলো আরো বাড়ানো যায় কিনা। এছাড়াও কিছু মৌলিক এলাকায় অপারেটিং বাড়ানো যায় কিনা, আরো নতুন নতুন এলাকায় এই সুবিধা দেয়া যায় কিনা সেটি তারা বলেছে।
আগামি বাজেট সম্পর্কে কোন রুপরেখা বা ধারনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আগামি বাজেট সম্পর্কে কোন ধারনা আজ দেইনি। আমাদের আরো অনেকগুলো মিটিং করতে হবে। মিটিং করার পর আমি মোটামুটি একটা স্ট্রাকচার দাঁড় করাতে পারব। এবং সেই স্ট্রাকচার তৈরী হলে আমি ম্যাক্রো এবং মাইক্রো লেভেলের সমস্ত কোম্পানীগুলোকে সামনে নিয়ে আমার বাজেট টিমের সাথে বসে চূড়ান্ত করে আপনাদের সামনে আসব। মূল বাজেটের আগে আমরা আইডিয়াটা দিতে পারব।
ব্যবসায়ীরা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের আগেই চিঠি দিয়েছেন। তাদের দাবি আমরা আগেই পেয়েছি। আজকে যেটা উঠে এসেছে আমাদের সিস্টেমের কারণে বিশেষ করে রিয়েল স্টেট সেক্টও থেকে তারা বলেছে অনেক কালো টাকা রয়েছে। কালো টাকা না বাড়িয়ে সরকারের কাজগুলো করা যায় সেগুলো নিয়ে তারা কথা বলেছে। কালো টাকা বাড়ানো বা না বাড়ানোর বিষয়ে কোন আলোচনাই আজ হয়নি। ওনারা কিন্তু আমাদের মন্ত্রণালয় ও এনবিআরকে চিঠি দিয়েছেন। আজকের সভায় কালো টাকা সাদা করার কোন প্রস্তাব আসেনি।
আলোচনায় দি ফেডারেশান অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, বাংলাদেশ নীটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর প্রেসিডেন্ট একেএম সেলিম ওসমান ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন, বাংলাদেশ লেদার গুডস এন্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফাকচারারস এন্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো:সাইফুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি চেম্বার বিল্ডিং (এমসিসিআই) এর ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রহমান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এন কে এ মুবিন (এফসিএ), চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজ, বাংলাদেশ ওমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিও প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহমেদ, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) এর প্রেসিডেন্ট রূপালী হক চৌধুরী, ওমেন এন্টারপ্রেনার এসোসিয়েশন অব্ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শাহরুক রহমান ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট আসফা হোসাইন, ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার অংশ নেন।