সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনা তহবিল বাড়ানোর পরিকল্পনা
আসিফ শওকত কল্লোল || বিজনেস ইনসাইডার

ছবি: বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ
ঢাকা (০৩ এপ্রিল): সরকার সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনা তহবিল বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান।
ওই কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি বেড়েছে। একই সঙ্গে তাদের প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে।
গেল বছর মার্চে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ১০০ কোটি টাকার প্রণোদনার মধ্যে ৭৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা সম্মুখসারির যোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ বা এদের মতো সরকারি কর্মকচারীদের দেওয়া হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। আর চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী এবং নার্সরা প্রণোদনা পেয়েছেন ২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার।
এ বছরের ২৯ মার্চ পর্যন্ত সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে বেতনসহ অন্যান্য ভাতার মাধ্যমে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গেল বছর এপ্রিলে সামনের সারির কর্মীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর পাশাপাশি করোনা ভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী ১১৯ সম্মুখসারির যোদ্ধার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ৮০০ জনের বেশি এমন পরিবারকে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেল জুনে মৃত্যুবরণকারী প্রথম চিকিৎসক মঈন উদ্দীনের পরিবারকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পর ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তার পরিবারকে আরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দাবী করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থায় আবেদন করতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, কিছু ক্ষেত্রে ভুয়া নথি দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ এসব আবেদন খতিয়ে দেখে।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিপূরণের জন্য অনেক আবেদন জমা পড়েছে। আমরা এসব আবেদনের সত্যতা যাচাই করে দেখছি।
করোনা সংকট মোকাবেলায় সরকার ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীর জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার (পদ মর্যাদার ভিত্তিতে) স্বাস্থ্য বীমা। কেউ এ ভাইরাসে মারাত্বক ঝুঁকি বা মারা গেলে এ অর্থের পরিমাণ ৫০ লাখ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
দায়িত্বপালনের সময় কেউ অসুস্থ্য হলে সরকার তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত হাসপাতাল কর্মচারীদের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আর এসব রোগীর চিকিৎসার করতে গিয়ে আক্রান্তদের জন্য জীবন বীমা হিসেবে ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।