বুধবার

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫


২ আশ্বিন ১৪৩২,

২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

মাশরুম চাষে আমিনুলের দিনবদল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ১৮ এপ্রিল ২০২১  
মাশরুম চাষে আমিনুলের দিনবদল

মাশরুম চাষে সফল যুবক আমিনুল ইসলাম মিলন

কুড়িগ্রাম (১৮ এপ্রিল): কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় এক যুবক মাশরুম চাষ করে এলাকায় বেশ সারা ফেলেছে। তার এই সাফল্যে উত্তরের জনপদের অনেকেই মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীরঝাড় ইউনিয়নে সড়ক-কাটা গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম মিলন। তিনি এই করোনাকালে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে গত বছর চাকুরি হারান। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরুম চাষ বিষয়ে জানতে পেরে গত নভেম্বর মাসে বগুড়ায় মাশরুম চাষের ওপর ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। 

এরপর ডিসেম্বরে প্রায় সোয়া লাখ টাকা খরচ করে অবকাঠামো তৈরি করে ছয় শ’ মাশরুম বীজ দিয়ে শুরু করেন মাশরুম উৎপাদনের কাজ। ফেব্রুয়ারিতেই তিনি মাশরুমের প্রথম ফলনেই প্রায় ৮০ হাজার টাকার মাশরুম বিক্রি করেছেন। ফলে, তার আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার মাশরুম উৎপাদন কেন্দ্রে স্পন (বীজ প্যাকেট) রয়েছে প্রায় এক হাজার দুই শ’টি। একটি স্পন ১৫/২০ দিনের মধ্যেই মাশরুম উৎপাদন শুরু হয় যা তিন মাস পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব হয়। 

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর (উদ্ভিদবিজ্ঞান) মীর্জা নাসির উদ্দিন বলেন, মাশরুম একটি মৃতজীবী ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। এর মধ্যে রয়েছে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের সমন্বয়। মাশরুম শরীরের কোলেস্টেরল কমায়, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিরাময় করে। এ ছাড়াও মাশরুম শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে অত্যন্ত  কার্যকারী। মাশরুম খেলে রক্ত শূন্যতা দূর হয়। ক্যান্সার, টিউমার প্রতিরোধ হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মাশরুম আদর্শ খাবার। 

তিনি আরও বলেন, এটি সরকারি-বেসরকারিভাবে বাজারজাত করা গেলে জেলায় মাশরুম চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে দারিদ্র্যপীড়িত এ জেলায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

মাশরুম চাষী আমিনুল ইসলাম মিলন জানান, স্থানীয়রা মাশরুম খাবার সম্পর্কে তেমনটা অবগত নন। এখন মাশরুম চাষ পদ্ধতি, খাবার ও এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারছেন। আমার মাশরুম চাষ সেন্টারে স্থানীয় বেশ কয়েকজনের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে ঢাকা, সিলেট, বগুড়া, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে মাশরুম নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবেও বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীরা মাশরুমের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বেশ মাশরুম বিক্রি বেড়েছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুল ইসলাম জানান, মাশরুম একটি পুষ্টিকর খাবার। রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সাধারণ মানুষ এটি তরকারি হিসেবে খেতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে আমিনুল ইসলাম মিলন মাশরুম বাজারজাত করছেন। আমিনুলের সাফল্য দেখে অনেকেই মাশরুম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বলে জানতে পেরেছি। 

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়