বৃহস্পতিবার

২৮ মার্চ ২০২৪


১৪ চৈত্র ১৪৩০,

১৮ রমজান ১৪৪৫

ফরিদপুরে শিলাবৃষ্টিতে হালি পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ৩১ মার্চ ২০২৩  
ফরিদপুরে শিলাবৃষ্টিতে হালি পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি

সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে উত্তোলনের অপেক্ষায় থাকা হালি পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের কদমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পেঁয়াজের কদমের ফুলগুলো ঝরে গেছে। এতে পেঁয়াজ চাষ করার সময় পেঁয়াজের বীজের সংকট দেখা দেবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

গত বুধবার সন্ধ্যায় ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টিতে এই ক্ষতি হয়। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ঋণগ্রস্ত কৃষকেরা। যদিও দাম না পেয়ে গত বছর পেঁয়াজ চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছিল এখানকার হাজারো কৃষকের। তারপরেও জীবিকার তাগিদে এবার বিপুল পরিমাণে হালি পেঁয়াজ চাষ করেন তারা। ইতোমধ্যে সেই পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে শিলা বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হল।

জানা গেছে, পেঁয়াজ চাষ করে সারা বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন সালথার বেশিরভাগ পরিবার। এবার সালথা উপজেলায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে।

একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, এমতিইে এবার পেঁয়াজের আশানুরূপ ফলন হয়নি। এরমধ্যে আবার শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। অন্যদিকে সারাবছরই বাজারে পেঁয়াজের দামও তুলনামূলক কম ছিল। সব মিলিয়ে এবারও পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকেরা পথে বসে যাবে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সরেজমিনে সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কুষ্টিয়ার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বেশিরভাগ নিচু জমির পেঁয়াজ তলিয়ে গেছে আর উচু জমির পেঁয়াজ শিলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা পেঁয়াজ ক্ষেতের ভেতরে আগাম পাটের বীজ বপন করেছেন, তাদের আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। এমন অবস্থায় কৃষকেরা এক বুক হতাশা আর মাথায় দুশ্চিন্তা নিয়ে ক্ষেতের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ কেউ শ্রমিকদের নিয়ে কাঁদা-পানিতে নেমে পেঁয়াজ উত্তোলন করছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত বিভাগদী গ্রামের কৃষক মো. কুদ্দুস মাতুব্বর বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। এরমধ্যে শিলাবৃষ্টিতে সাড়ে ৩ বিঘা জমির পেঁয়াজই তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া এসব পেঁয়াজ ঘরে মজুদ রাখা সম্ভব না। ঘরে রাখলে সব পচে যাবে।

মো. আলতাব শেখ নামে আরেক কৃষক বলেন, গত বছর পেঁয়াজ চাষ করে লোকসান হয়েছে। তারপরেও এবার ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। ফলন তেমন ভাল হয়নি। দুই এক দিনের মধ্যে ক্ষেতের পেঁয়াজ উত্তোলন করতে চেয়েছিলাম। তার আগেই শিলা বৃষ্টিতে পেঁয়াজের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।

বোয়ালিয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মোহাম্মদ মিঠু মোল্লা বলেন, আমরা এখন বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ চাষ করি। আমরাতো আর চাকরিজীবি না যে মাস শেষে বেতন পাবো। সবকিছুর দামই বাড়তি শুধু কৃষকের পেঁয়াজের দাম নেই।

সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জীবাংশু দাস বলেন, বুধবারের শিলাবৃষ্টিতে নিচু এলাকার পেঁয়াজের জমিতে হালকা পানি জমে গেছে কোথাও কোথাও। যে পেঁয়াজগুলো তোলার সময় হয়নি সেগুলো এখন তোলা লাগতেছে। তবে সমতল জমির পেয়াজ এখনও ভালো আছে। আবহাওয়া এমন থাকলে বা আর বৃষ্টি না হলে তলিয়ে যাওয়া পেঁয়াজের বেশি ক্ষতি হবে না। তবে এসব পেঁয়াজ বেশিদিন ঘরে রাখা যাবে না।

Nagad
Walton

সর্বশেষ