শনিবার

২০ এপ্রিল ২০২৪


৭ বৈশাখ ১৪৩১,

১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসরায়েলী হামলায় ইসলামিক জিহাদের দুই শীর্ষ নেতাসহ নিহত ৩২

|| বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ৭ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ১৮:৪৬, ৭ আগস্ট ২০২২
ইসরায়েলী হামলায় ইসলামিক জিহাদের দুই শীর্ষ নেতাসহ নিহত ৩২

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা (০৭ আগস্ট): গাজায় ইসলামিক জিহাদ গ্রুপের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিমান হামলায় সংগঠনের দুই শীর্ষ নেতাসহ ৩২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়টি শিশুও রয়েছে।  

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩২ জনের মধ্যে ছয়টি শিশু, ইসলামিক জিতাদের নেতা খালেদ মনসসুর এবং তাসীর জাবারিসহ আরও বেশ কয়েকজন যোদ্ধা রয়েছেন।

ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার থেকে ফিলিস্তিন থেকে প্রায় ছয়শর মত রকেট ও মর্টার নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইসরায়েল বলেছে যে পিআইজের কাছ থেকে "আশু হুমকির" কারণে তারা এই অভিযান শুরু করেছে।

২০২১ সালের মে মাসে ১১ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের পর এটিই ইসরায়েল এবং গাজার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষ। ওই বছর ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং বারো জনের মতো ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল।

ইসরাইল তার এই চলমান অভিযানের নাম দিয়েছে 'ব্রেকিং ডন'। এ অভিযান এক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে বলে ইসরাইল হুশিয়ারি দেয়েছে।

২০২১ সালের ওই সংঘাতের পর রবিবার প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিন থেকে ছোড়া রকেট গাজায় গিয়ে পড়ে। ইসরাইল গাজা উপত্যাকায় বিমান হামলার মাধ্যমে পিআইজে নেতা খালেদ মনসুরকে হত্যা করার পর গাজা থেকে ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা শুরু হয়। এর আগেও ইসরাইল খালেদকে হত্যা করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল ।
 
ইসরাইল বলছে, গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি, অধিকৃত পশ্চিম তীরে অভিযানে পিআইজে'র ১৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গাজায় নতুন করে আবারও সহিংসতায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর এবং ২০০ জনের আহত হওয়ার ঘটনায় "ইসরায়েলি আগ্রাসনকে" দায়ী করেছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

যদিও হামাসের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোন রকেট ছোড়া হয়নি বলে মনে হচ্ছে।

ইসলামিক জিহাদের সাথে হামাসের মতাদর্শিক মিল রয়েছে এবং প্রায়শই গোষ্ঠীটির সাথে হামাস তাদের কর্মকাণ্ড সমন্বয় করে থাকে।

শুক্রবার রাতে হামাস জোরালো এক বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে "প্রতিরোধী গোষ্ঠীগুলি" ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।

কিন্তু হামাস যেহেতু গাজার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাই সম্ভবত বাস্তবসম্মত কোন বিবেচনা থেকে এখন আরও বেশি সংশ্লিষ্ট হওয়া থেকে বিরত রয়েছে গোষ্ঠীটি।

গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু বাড়লে হামাসের এই হিসাব হয়ত বদলে যেতে পারে।

হামাস যদি এবারের সংঘর্ষে যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নেয় তবে তা দ্রুত আরও তীব্র হয়ে উঠবে।

ইসলামিক জিহাদ উত্তর পশ্চিম তীর থেকে তাদের একজন নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিশোধ নিতে পারে এমন আশঙ্কায় ইসরায়েল গাজার সাথে তার ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানুষ জীবন ইতিমধ্যেই অনেক কঠিন হয়ে উঠেছে।

শনিবার কোন জ্বালানি সরবরাহ না আসায় গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ কোম্পানিটির একজন মুখপাত্র।

ওদিকে ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা বলেছেন, গাজা থেকে ছোড়া চারশটি রকেট এবং মর্টারের মধ্যে সত্তরটি ইসরায়েলি ভূখণ্ড পর্যন্ত পৌঁছায়নি। সেগুলো গাজা উপত্যকায় পড়েছে। আর যেগুলো ইসরায়েলি আকাশসীমায় পৌঁছেছে তার বেশিরভাগই 'আয়রন ডোম' ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, ইসলামিক জিহাদের প্রায় ৩০ টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে দুটি অস্ত্রাগার এবং ছয়টি রকেট তৈরির কারখানা।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এই হামলায় ২ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে।

শুক্রবারের প্রথম হামলার কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিড বলেছেন, "তাৎক্ষণিক হুমকির বিরুদ্ধে ইসরাইল একটি সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান" চালিয়েছে।

আইডিএফ বলেছে যে তারা পিআইজে-এর সাথে যুক্ত স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে গাজা শহরে উঁচু ভবন প্যালেস্টাইন টাওয়ার রয়েছে। ভবনটিতে শুক্রবারের হামলার পর প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে।

ইরানের রাজধানী তেহরানে সফরকালে পিআইজে মহাসচিব জিয়াদ আল-নাখালা বলেছেন: "আমরা এই আগ্রাসনের জোরালো জবাব দেব, এবং এমন একটি লড়াই হবে যাতে আমাদের জনগণ জয় হবে।"

"এই যুদ্ধের জন্য কোন লাল রেখা নেই... এবং তেল আবিব প্রতিরোধের রকেটের মুখে থাকবে।"

সোমবার রাতে পশ্চিম তীরে পিআইজে-এর প্রধান বাসেম সাদিকে ইসরায়েল গ্রেপ্তারের করার পর সর্বশেষ এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়।

 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়