যুক্তরাষ্ট্রে শিশুরাও নিরাপদ নয়!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৫ মে): উন্নত জীবন, সামাজিক নিরাপত্তা আর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় আমাদের অনেকেই নিজের দেশ, আপনজনকে ছেড়ে পাড়ি জমান স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু কী হচ্ছে সেখানে? যুক্তরাষ্ট্র এখন স্কুলে শিশুদেরও নিরাপত্তা দিতে পারছে না।
টেক্সাসের রব এলিমেন্টারি স্কুলে বন্দুক হামলায় ১৯ শিশুসহ ২১ জন নিহতের ঘটনায় স্তম্ভিত সারা বিশ্ব। এ ঘটনায় এরইমধ্যে পাঁচ দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউজ। তবে আমেরিকায় এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। বেসরকারি সংস্থা গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের (জিভিএ) বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত নির্বিচারে গুলিবর্ষণের অন্তত ২১২টি ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব গুলিবর্ষণের ঘটনায় হামলাকারী ছাড়া চার বা ততোধিক ব্যক্তি আহত বা নিহত হয় সেগুলোকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে সিএনএন এবং গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ।
টেক্সাসের স্কুলের মতো কোন ঘটনা যদি বাংলাদেশ বা এশিয়ার কোন দেশে ঘটতো, তাহলে দেখা যেতো পশ্চিমা সরকারের পক্ষ থেকেই আমাদের সরকারের কাছে সরাসরি কৈফিয়ত চেয়ে বসতো। অথচ মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনা ঘটার পর হামলাকারীকে হত্যার মাধ্যমে মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। সেই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ওই কিশোর একাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। এভাবেই তারা এ ধরনের দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান না করে, কেবল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার মধ্যমেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক আবেগঘন ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আমরা জানি, অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে আর কখনও দেখতে পাবে না। তারা কখনও সন্তানকে আর বিছানায় লাফিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারবেন না। সন্তান হারানো আত্মার একটি টুকরো ছিঁড়ে ফেলার মতো।
বন্দুক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আইন নিয়েও কথা বলেন তিনি। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, আমরা এমনটি কেন ঘটতে দিচ্ছি?
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১২ সালে কানেকটিকাটে একটি স্কুলে হামলা চালানো হয়। এতে ২০ শিশুসহ ২৬ জন নিহত হয়। ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে একেই সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। গত ১৪ মে বাফেলো শহরের একটি ব্যস্ত সুপার মার্কেটে ঢুকে গুলি চালায় ১৮ বছরের এক তরুণ। এতে ১০ জন নিহত হয়। সম্প্রতি এমন ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার বাসিন্দাদেও মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, দেশজুড়ে বাবা-মায়েরা তাদের বাচ্চাদের বিছানায় শুইয়ে দিচ্ছেন, গল্প শোনাচ্ছেন, গান গাইছেন। তবে তারা চিন্তিত যে, আগামীকাল তারা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার পর কিংবা তাদের নিয়ে মুদি দোকান বা অন্য কোনও পাবলিক স্পেসে যাওয়ার পর কী ঘটতে পারে!