বুধবার

২৪ এপ্রিল ২০২৪


১১ বৈশাখ ১৪৩১,

১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নাসা স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৮:০২, ১১ ডিসেম্বর ২০২১  
নাসা স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ছবি: বেসিস

ঢাকা (১১ ডিসেম্বর): দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বের ১৬২টি দেশের ৪৫৩৪টি দলকে হারিয়ে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২১ এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ‘নাসা বেষ্ট মিশন কনসেপ্ট’ ক্যাটাগরিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের খুলনা থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাসাতে মনোনয়ন পাওয়া দল ‘টিম মহাকাশ’।

শনিবার বেসিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, টিম মহাকাশের উদ্ভাবিত টুলস "ARSS-Advanced Regolith Sampler System" মূলত মহাকাশচারীরা ভিনগ্রহের পৃষ্ঠে অভিযানের সময় মুক্তভাবে উড়তে থাকা ধুলিকণা নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে পারবে। চাঁদে বিগত মানব মিশনগুলোতে মহাকাশচারীরা পৃষ্ঠতলে উপস্থিত ধূলিকণার মধ্যে কাজ করতে সমস্যার সম্মুখীন হয় বলে অভিযোগ করে আসছিলেন।

কম গ্রাভিটিতে মূলত ধূলিকণা গুলো সহজেই উৎক্ষিপ্ত হয়ে ভাসতে থাকে, ফলে নমুনা সংগ্রহ করতে কষ্ট হতো মহাকাশচারীদের, একই সাথে মহাজাগতিক রেডিয়েশানের কারণে আয়নিত হওয়ায় তা স্পেসস্যুট-এর গায়ে লেগে থেকে স্যুট ড্যামেজ করার মত পরিস্থিতি তৈরি করতো। টিম মহাকাশ এই সমস্যার কার্যকর একটি সমাধান বের করে একটি টুলসেট উদ্ভাবন করে যেটি এই ধুলিকণাগুলোকে আবদ্ধ চেম্বারে আটকে ফেলে এবং ধুলিকণাগুলোকে ভেসে থাকার মত পরিস্থিতি তৈরি করতে দেয় না।

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২১ তে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মিত হচ্ছে আমাদের তরুণদের হাত ধরে। তরুণদের নিয়ে গড়া খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি (বাউয়েট) সম্মিলিত টিম মহাকাশ বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করেছে। বাংলাদেশে বেসিস, বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের মাধ্যমে এ আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের দল দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমি টিম মহাকাশ এবং বেসিসকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার আরেকটি অনন্য দৃষ্টান্ত।

এ অর্জন সম্পর্কে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, এ বছর আমাদের লক্ষ্যই ছিল গত আসরগুলোর তুলনার ভালো করার। ২০১৮ সালে আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম কিন্ত দ্বিতীয়বারের মতো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নে খেতাব অর্জন নিঃসন্দেহে বড় অর্জন। আমরা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে যাত্রা অব্যাহত রেখেছি, এ অর্জন আমাদের প্রচেষ্টার পথে আরেকটি বড় মাইলফলক। আমি বাংলাদেশের নাম বিশ্ব দরবারে আরো উঁচুতে আসীন করার জন্যে ‘টিম মহাকাশ’কে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

বেসিস সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, আমরা আবারও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। বিজয়ের মাসে এ অর্জন গোটা বাংলাদেশের। “টিম মহাকাশ” বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। অক্লান্ত এ পরিশ্রমের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষ করে বেসিস সভাপতি জনাব সৈয়দ আলমাস কবীর, উপদেষ্টা আরিফুল হাসান অপু, উপদেষ্টা মাহদী-উজ-জামান, স্থানীয় মেন্টরগণ, স্থানীয় বিচারকগণ এবং প্রকল্প সমন্বয়কদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

টিম মহাকাশের দলনেতা সুমিত চন্দ বলেন,‘নিজের দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারাটা সবসময় গর্বের। আমরা এমন একটা সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করেছি যেটা নিয়ে নাসাসহ পৃথিবীর বড় বড় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এখনো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা চাইলেই পৃথিবীর বড় বড় সমস্যার সমাধান বের করে ফেলতে পারে সেটা আবারও দেখিয়ে দিয়েছি আমরা। গত বছর থেকে আমরা এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি যার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান বেসিসের। লক্ষ্য অর্জন করার জন্যে প্রত্যক্ষ মেন্টরশীপের মাধ্যমে তারা আমাদেরকে সহায়তা করেছে সবসময়।’

বেসিস এবং বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় আয়োজিত নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার এবারের আসরে বাংলাদেশ থেকে আট শতাধিক প্রকল্প জমা পড়েছিলো। অসম্পূর্ণ প্রকল্প বাতিল করার পর যাচাই-বাছাই শেষে ১২৫টি প্রকল্পের প্রতিনিধিরা ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী হ্যাকাথনে অংশ নেয় এবং সেরা ২৭টি প্রকল্প নাসার জন্যে বাংলাদেশ থেকে মনোনীত করা হয়। বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) এর আয়োজন করা হয়েছিল।

 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়