টানা ৬ জয়ে দুইয়ে মাশরাফি-নাঈমের রূপগঞ্জ
ক্রীড়া প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
রূপগঞ্জ দল, সংগৃহীত
ঢাকা (১২ িএপ্রিল): মাশরাফি বিন মর্তুজা মানেই যেন ম্যাজিক। তার নেতৃত্বের ছোঁয়ায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথ চলায় আরও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। জয় দিয়ে শুরু লিগের পথচলা, এরপর দুই ম্যাচে হার। তারপর ধাক্কা পেছনে ফেলে জয়টাকে রীতিমতো অভ্যাস বানিয়ে ফেলল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
একের পর এক বাধা টপকে শিরোপা পূনরুদ্ধারের প্রত্যয়ে একজোট মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফের চমক রূপগঞ্জের। মাত্র ১৬৮ রান পুঁজি নিয়েও ব্রাদার্স ইউনিয়েনের বিপক্ষে বিশাল জয় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের।
এদিন হোম অব ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের সংগ্রাম করেই করেই কেটেছে সময়। মিরপুরের উইকেট এমনই যে এখানে দাপটে শট খেলতে পারছিলেন না ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে অসমান বাউন্সে স্পিনাররা পেয়েছেন সুফল। এমন ম্যাচে ৮৩ রানের জয় তুলেছে রূপগঞ্জ। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে তুলে নিয়েছে টানা ষষ্ঠ জয়।
মঙ্গলবার সকালে বোলারদের রাজত্বের এমন ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নামে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ৪৫ ওভারে কমে আসা ম্যাচে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা অলআউট হয়ে করে ১৬৮ রান। জবাব দিতে নেমে লিজেন্ডসদের ঘূর্ণি আর পেস আক্রমণের সামনে অসহায় মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্রার্দাস ইউনিয়ন। তারা মাত্র ৮৫ রানে অলআউট।
এই বড় জয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে মাশরাফি বিন মর্তুজার রূপগঞ্জ। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আগের মতোই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আরেকটি রেলিগেশন লিগ খেলা নিশ্চিত হয়ে গেল ব্রাদার্সের।
মঙ্গলবারও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জয়ের নায়ক অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম। মনে রাখার মতো এক লিগ কটোচ্ছেন ৩৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে ব্যাট-বল দুটিতেই হাসিমুখ তার। এদিনও নিজেকে উজাড় করে দেন নাঈম। স্লো উইকেটে মানিয়ে নিয়ে ৮১ বলে করেন ৪৫ রান। এরপর বল হাতে ৩.২ ওভারে ২০ রানে নেন ৩ উইকেট। ম্যাচসেরা নাঈম ইসলামই।
অবশ্য নাঈম নন, রূপগঞ্জের হয়ে ব্যাট দাপট দেখালেন সাব্বির রহমানও। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এই তারকা দেখে-শুনে খেলে বুঝিয়ে দেন তিনি ফুরিয়ে যাননি! ৫০ বলে ৪৬ রানের লড়াকু ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ১ ছক্কা। রকিবুল হাসানের ব্যাটে ২৪ ও তানবীর হায়দার ১৪। এই ম্যাচে অধিনায়ক মাশরাফি চারে ব্যাট করতে নেমে ১৭ বলে ৭ রানে আউট মাশরাফি।
জবাব দিতে নেমে কখনোই ব্রাদার্সকে স্বস্তি দেয়নি রূপগঞ্জের স্পিন ও পেস বোলাররা। একের পর এক উইকেট তুলে নিয়েছে তারা। এই উইকেটে রান পেতে অভিজ্ঞতা-দক্ষতা চাই। এখানে লিজেন্ডসদের চেয়ে পিছিয়ে গোপীবাগের ক্লাবটি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৬ রান করেন দু'জন- সাদিকুর রহমান ও চতুরঙ্গ ডি সিলভা। ১৪ রান করেন মাইশিকুর রহমান। লিজেন্ডসের বোলিংয়ের দাপুটে সামনে শুধু উইকেটে এসেছেন আর বিদায় নিয়েছেন। আশরাফুল করেন ৭ রান।
বল হাতে দাপট দেখান লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের ভারতীয় রিক্রুট পেসার চিরাগ জানি। তিনি ৬ ওভারে ২২ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। নাঈম ৩ উইকেট নিয়েছেন ২০ রানে। নাবিল সামাদ ৪ ওভারে ৪ রানে ১ উইকেট। মাশরাফি ৭ ওভারে ৩০ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। লিজেন্ডসরা আরও একবার টিম-ওয়ার্কের পথ ধরেই দেখল দারুণ এক জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ : ৪৪.১ ওভারে ১৬৮/১০ (তানজিদ ৪, রকিবুল ২৪, চিরাগ ৮, মাশরাফি ৭, নাঈম ৪৫, সাব্বির ৪৬, তানবির ১৪; ইরফান ৪/২৩, সোহাগ ২/৩৬, চতুরঙ্গা ২/২৮)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ২২.২ ওভারে ৮৫/১০ (ইমতিয়াজ ৮, সাদিকুর ১৬, মাইশুকুর ১৪, চতুরঙ্গা ১৬; চিরাগ ৪/২২, রানা ১/৮, নাবিল ১/৪, নাঈম ৩/২০, মাশরাফি ১/৩০)
ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৮৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : নাঈম ইসলাম।