শুক্রবার

২৯ মার্চ ২০২৪


১৫ চৈত্র ১৪৩০,

১৯ রমজান ১৪৪৫

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়

স্পোর্টস ডেস্ক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ২৪ মার্চ ২০২২  
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা (২৪ মার্চ): তাসকিনের নৈপুণ্যময় বোলিংয়ের পর জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা বাংলাদেশের জন্য ঝিলিক দিচ্ছিল। এরপর ব্যাটারদের পালা। তারাও দেখাল দক্ষতা। অর্থাৎ বোলাররা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৫৪ রানে অলআউট করে দিয়ে ম্যাচ যতটা সহজে পরিণত করেছিলেন, ব্যাটাররা সেই সহজ কাজটাতে আরও সহজ করে নিলেন। 

ব্যাটিংয়ে এ নৈপুণ্যে অধিনায়ক তামিম ইকবালের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ না করলে নয়। অপর ওপেনার লিটন দাসকে নিয়ে তিনি ১২৭ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয়কে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন।

শেষ পর্যন্ত লিটন আউট হলেও সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্টস পার্কে মাত্র ২৬.৩ ওভারে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ইতিহাস গড়ে মাঠ ছাড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিধর দেশের মাটিতে গিয়ে তাদেরই বিপক্ষে এই প্রথম সিরিজ জয়ের ইতিহাস রচনা করলেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।

এর পূর্বে, যে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে কোনো ফরম্যাটে একটিও জয় ছিল না বাংলাদেশের। সেখানে শুধু ম্যাচ জয়ই নয়, সিরিজ জয় রীতিমতো স্মরণীয় ঘটনা। বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতির দুর্দান্ত একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে এই সিরিজ জয়।

১৫৫ রানের সহজ লক্ষ্য নির্ধারিত হয় জয়ের জন্য। এই লক্ষ্য পাড়ি দিতে গিয়ে তাকে মোটেও কঠিন করে তুললেন না দুই ওপেনার। বরং তামিম ইকবাল বিধ্বংসী ব্যাটিং করে বাংলাদেশের জয়কে আরও সহজ করে দেন। লিটনকে অন্যপ্রান্তে দর্শক বানিয়ে একের পর এক শর্ট খেলতে থাকেন তিনি। যে কারণে দেখা গেছে, ১০ম ওভারে কাগিসো রাবাদার মতো বোলারকে চারবার বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন তিনি।
 
লিটন দাস আউট হওয়ার পর জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামেন সাকিব আল হাসান। তামিম-সাকিব মিলে বাকি কাজ শেষ করেন আর মাত্র ৫ ওভারেই। ২৬.৩ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। হাতে বাকি ছিল তখনও ১৪১ বল।

তামিম ইকবাল অপরাজিত থাকলেন ৮৭ রানে। ৮২ বলে খেলা ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে। ওয়ানডেতে নিজের ক্যারিয়ারে এটা তামিমের ৫২তম হাফ সেঞ্চুরি। ২০ বল খেলে ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব আল হাসান। 

ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের দেহভঙ্গী বলে দিচ্ছিল ভালো কিছু হতে যাচ্ছে। টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাট করতে নামার পর প্রথম ওভারেই শরিফুল যেভাবে বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছিলেন। তার দ্বিতীয় বলেই পরাস্ত হন ওপেনার জানেমান মালান। আউটের আবেদন করেছিলেন তিনি। আম্পায়ার আউট না দেয়ায় খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই শরিফুল রিভিউ নিতে বলেন তামিমকে।  আউট না হলেও আত্মবিশ্বাস এসে যায় খেলোয়াড়দের। শেষ পর্যন্ত সেই আত্মবিশ্বাসের বলেই মাত্র ১৫৪ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। তাসকিন নিয়েছেন ৫ উইকেট।

জয়ের জন্য ১৫৫ রানের সহজ লক্ষ্য। এই রান করতে নেমে শুরুতেই বিপদ ঘটিয়ে বসতে পারতেন ওপেনার লিটন দাস। একেবারে প্রথম ওভারেই কাগিসো রাবাদার বলে থার্ড স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। কিন্তু সেখানে প্রোটিয়া ফিল্ডার কেশভ মাহারাজ বলটি তালুবন্দি করতে পারেননি। বেঁচে যান লিটন। এরপর আর বাংলাদেশকে থামানো যায়নি।

এর পূর্বে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে মাত্র ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। শুরুটা ভালো করেছিল তারা। ৬ ওভারের মধ্যে ৪৫ রান পার হয়ে যায়। ৬.৫ ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে প্রথম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। আউট হন কুইন্টন ডি কক, ১২ রানে।

তাসকিন আহমেদ ৯ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। ওয়ানডেতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ফাইফারের দেখা পেলেন তাসকিন। সাকিব আল হাসান নেন ২ উইকেট। শরিফুল এবং মেহেদী হাসান মিরাজ নেন একটি করে উইকেট। ২৮ রান করা কেশভ মাহারাজ হন রানআউট।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ছয়বার সিরিজ খেলে দুবার জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়