জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ দেওয়ার দিন আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দেওয়ার সময় তোলা আলোকচিত্র। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা (২৫ সেপ্টেম্বর): আজ ঐতিহাসিক ২৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৭৪ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে প্রথম বারের মতো বাংলা ভাষায় ভাষণ দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ ভাষণের মাধ্যমে জাতিসংঘের সদস্য বিশ্বের সকল দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে উপলব্ধি করে, বাংলা ভাষাভাষী বাঙালি জাতির জন্য রয়েছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। তার নাম বাংলাদেশ। আর, বাংলা ভাষার নামে এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোটি কোটি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাদের উন্মুখ করে তুলেছিলেন দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে। তারও পূর্বে যুক্ত হয়েছিলেন রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবির আন্দোলনে। জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে সেই বঙ্গবন্ধু বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছিলেন এই ভাষাকে।
বঙ্গবন্ধু তাঁর এ দিন ভাষণের শুরুতে বলেন, ‘আজ এই মহামহিমান্বিত সমাবেশে দাঁড়াইয়া আপনাদের সাথে আমি এই জন্য পরিপূর্ণ সন্তুষ্টির ভাগীদার যে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ এই পরিষদে প্রতিনিধিত্ব করিতেছেন। আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পূর্ণতা চিহ্নিত করিয়া বাঙালি জাতির জন্য ইহা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার অর্জনের জন্য এবং একটি স্বাধীন দেশে মুক্ত নাগরিকের মর্যাদা নিয়া বাঁচার জন্য বাঙালি জনগণ শতাব্দীর পর শতাব্দীব্যাপী সংগ্রাম করিয়াছেন, তাঁহারা বিশ্বের সকল জাতির সাথে শান্তি ও সৌহার্দ্য নিয়া বাস করিবার জন্য আকাঙ্ক্ষিত ছিলেন।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণে বলেন, যে মহান আদর্শ জাতিসংঘ সনদে রক্ষিত আছে, আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই আদর্শের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করিয়াছেন। আমি জানি, শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সকল মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের উপযোগী একটি বিশ্ব গড়িয়া তোলার জন্য বাঙালি জাতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আমাদের এই অঙ্গীকারের সাথে শহীদানের বিদেহী আত্মাও মিলিত হইবে।
এ বছর বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ প্রদানের ৪৭তম বার্ষিকী উদ্যাপনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য একটি ই-পোস্টার প্রকাশ করেছে।
এদিকে, এই দিনটিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সাল থেকে ‘বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে পালন করে আসছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য অগ্রসর জাতির অভিবাসীদের সঙ্গে উজ্জ্বল পংক্তিভুক্ত হয় বাংলাদেশীরাও। এর আগে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সিনেটে একটি সেশনে আলোচনার পর আইন পরিষদে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বছর তৃতীয় বারের মত সিনেটের আইন পরিষদ কর্তৃক নবায়ন হল।