শুক্রবার

২৯ মার্চ ২০২৪


১৫ চৈত্র ১৪৩০,

১৯ রমজান ১৪৪৫

জনগণের আস্থা অর্জনে বিএনপি ধুঁকছে: হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
জনগণের আস্থা অর্জনে বিএনপি ধুঁকছে: হানিফ

সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জনগণের আস্থা অর্জনে বিএনপি ধুঁকছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, বিএনপি জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করছে, কিন্তু পারছে না। কারণ তাদের দলের যে নেতৃত্বে আছে সেই নেতৃত্বে শিষ্টাচার, সভ্যতা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সততার ঘাটতি আছে।

আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হানিফ।

বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, তাদের নেতৃত্ব (তারেক রহমান) সমাজের কাছে আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারেনি, সে কখনোই জনগণের নেতা হতে পারে না।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে হানিফ আরও বলেন, ‘উনাদের নেতা তারেক রহমান। তার কোনো সভ্যতা, ভদ্রতা আছে? সভ্যতা সে শিখেনি। যার কারণে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি; সেই জাতির পিতার নাম বলার সময় বলে মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্মানীয়, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি; অথচ তার নাম বলার সময় বলে হাসিনা। এমন যেন মনে হয় তার সমবয়সি। আর আমরা বেগম খালেদা জিয়া বলে সম্বোধন করি। হত্যা, দুর্নীতির দায়ে কারাগারে, তবুও আমরা সম্মান করে বলি। এতেই প্রমাণ হয় তার মধ্যে শিষ্টাচার, ভদ্রতা নেই।’

হানিফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সন্ত্রাসের রাজনীতি করেছে, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে নির্যাতন করেছে। তাদের মধ্যে কোনো মানবতাবোধ ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। ২০০৯ সালেও আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলারের নিচে। দারিদ্র্যসীমা ছিল ৬০ শতাংশ। আওয়ামী লীগ দেশের দায়িত্ব নিয়ে দরিদ্র বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় আজ প্রায় ৩ হাজার ডলার। দারিদ্র্যসীমা ২০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা। যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন পূরণই এখন আমাদের লক্ষ্য।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার মেধা, বিচক্ষণতায় আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। উন্নয়নের এ ধারা টেকসই রাখতে হলে আমাদের বর্তমান সমাজে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মানুষকে আদর্শিক, নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সৎ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। কারণ অসৎ জাতি হলে এ উন্নয়ন ধরে রাখতে পারব না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, কোনো গোলটেবিল বৈঠক বা কোনো মেজরের বাঁশির হুইসেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসেনি। স্বাধীনতা অনেক কষ্টে, রক্তে পাওয়া। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হবে। তা না হলে রাজাকার, আলবদররা বিভ্রান্ত করার সুযোগ পাবে। যেভাবে পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিল।’

শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসনের প্রতিবাদ করায় বঙ্গবন্ধুকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। দেশের জন্য তার আত্মত্যাগ জানতে হবে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা পড়তে হবে।

সমাজ থেকে সভ্যতা-ভদ্রতা হারিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই দেশ গড়বে। এদের মধ্যে নৈতিকতা, শিষ্টাচার না থাকলে সমাজ ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারবে না।

সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশু-কিশোরদের নিয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু আততায়ীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের সৌভাগ্যের দ্বার বন্ধ করে দিয়েছিল।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছেন। একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, হত্যা, ধর্ষণ করেছিল তাদের বিচার করেছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাহাদুর বেপারী, লিয়াকত সিকদার, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মীর মোশাররেফ হোসেন, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল, উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সোবাহান প্রমুখ।
 

Nagad
Walton

সর্বশেষ