৮ মাসে ৫৭৪ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার: কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিজনেস ইনসাইডার
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম
ঢাকা (৩০ সেপ্টম্বর): চলতি বছরের গত ৮ মাসে দেশে ৫৭৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৪ জন। এদিকে, এ সময়ের মধ্যে ২ হাজার ৩০১ জন কন্যাশিশুর বাল্যবিয়ে হয়েছে এবং ৫৮৯টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এসব তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ‘কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন-২০২২’ উপস্থাপন করেছে। এ বছরের প্রথম ৮ মাসে ২৪টি জাতীয় জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন দৈনিক পত্রিকার তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নাছিমা আক্তার অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এ প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্য তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৫৭৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ৮৪ জন ও ৪৩ জন প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়, প্রেমের অভিনয় ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৪৯ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে, ধর্ষণের পর ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছে, ৮৭ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ৮ মাসে ৭৬ কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। এর বেশির ভাগই রাস্তায়, নিজ বাসায় ও স্বজনদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার। এ সময় পর্নোগ্রাফির শিকার ১৫ জন, অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার ৩ জন, অপহরণ ও পাচারের শিকার ১৩৬ জন, হত্যার শিকার ১৮৬ জন, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার ১৩ জন এবং হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে, আত্মহত্যা করেছে ১৮১ জন ও ৮ কন্যাশিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে যাওয়া হয়।
‘কন্যাশিশু নির্যাতন ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে’ উল্লেখ করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কন্যাশিশু নির্যাতন প্রতিরোধ প্রয়োজন। তাদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করতে পারলে সবার জন্যই সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সুপারিশ করেন, কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধে শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার সব ঘটনা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে; সর্বস্তরের জন্য 'যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন' নামে একটি আইন প্রণয়ন করতে হবে; সাইবার নিরাপত্তায় নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করাসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।