মঙ্গলবার

২৩ এপ্রিল ২০২৪


১০ বৈশাখ ১৪৩১,

১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও বুস্টার ডোজে ধীর গতি

আইনুল হক রয়েল || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১ জুলাই ২০২২   আপডেট: ২১:২৮, ১ জুলাই ২০২২
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেও বুস্টার ডোজে ধীর গতি

গ্রাফিক্স:বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশ

ঢাকা (০১ জুলাই): দেশে গত কয়েকদিন ধরেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়ছে। তবে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকা সত্ত্বেও এ পরিস্থিতিতে বুস্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সরকার ইতিমধ্যে দুই ধাপে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। তবে বুষ্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে।

দেশে বুস্টার ডোজ পাবার উপযোগী জনগোষ্ঠীর অন্তত ৪৬ শতাংশ এখনও বুস্টার ডোজের বাইরে রয়ে গেছে। কিন্তু দ্রুত বুস্টার ডোজ দেওয়ার সরকারী উদ্যোগ এখনও তেমন ভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা প্রতিপালনের পাশাপাশি, সরকারকে সংক্রমণ রোধ করতে জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনতে হবে।

গত চার দিন ধরে প্রতিদিন ২,০০০ জনেরও বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ছে। একই সময়ে এ ভাইরাসে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশের উপরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এদিকে, সরকার করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণ প্রতিহত করতে নতুন করে নির্দেশনা দিয়ে করে একটি নোটিশ জারি করেছে।

সার্বিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করে অনেক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন, চলমান ধারা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য চতুর্থ ঢেউয়ের কবলে পড়তে পারে।

স্বাস্থ্য নির্দেশনা কার্যকর করতে সরকারকে খুব বেশি আগ্রহী দেখা গেলেও বুস্টার ডোজ দেওয়ার ততটা সক্রিয় মনে হয় না।

সরকারী তথ্য অনুসারে, ১২.৯ কোটিরও বেশি লোককে করোনভাইরাসের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ২৯ জুন পর্যন্ত এ সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৭৫.৭৫ শতাংশ।

এছাড়াও, প্রায় ১১.৯৩ কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে যা মোট জনসংখ্যার ৭০.০৫ শতাংশ এবং বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ২,৮৯,২৩,১৬২ জন। এ সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২৪.২৪ শতাংশ।

এ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে মোট বুস্টার ডোজ পাবার উপযোগি জনগোষ্ঠীর অন্তত ৪৬ শতাংশ মানুষ এ ডোজ এখনো পাননি। এ বিষয়টি এখন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের মাধ্যমে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছিল।

দেশের করোনভাইরাস পরিস্থিতি কমপক্ষে তিন মাস নিয়ন্ত্রণে ছিল। জুনের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করে।

ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বিজনেস ইনসাইডার বাংলাদেশকে বলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ছয় থেকে নয় মাস কার্যকর থাকে।

তিনি বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর অনেকেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে এবং এরই মধ্যে তারা বুস্টার ডোজ না নেওয়ায় তারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়েছে।

এএসএম আলমগীর বলেন, ভ্যাকসিন মানবদেহে অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু এবং সংক্রমণের হার কমায়। সুতরাং, সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আমাদের সবাইকে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পাশাপাশি বুস্টার ডোজ নিতে হবে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী দ্রুততার সাথে এর বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করছে। আর প্রায় ৮০ শতাংশ করোনা পজিটিভ মানুষকে এখন উপসর্গহীন পাওয়া যাচ্ছে। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।

 

Nagad
Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়