কোরবানির হাট: মানতে হবে ১৬ নির্দেশনা

ঢাকা (৩০ জুন):  আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসতে চলেছে কোরবানির পশুর হাটগুলো। ব্যাপরীরাও পশু নিয়ে হাটে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্যস্ত সময় কাটছে হাট ইজারাদারদের।

আর এ হাট পরিচালনার জন্য দেওয়া হয়েছে ১৬টি নির্দেশনা। যা মেনে হাট পরিচালনা করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে কোরবানির হাটের ইজারাদার, ক্রেতা বিক্রেতাদের জন্য এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

কোরবানির হাটে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা: 

(এক) কোরবানির হাট বসানোর জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বদ্ধ জায়গায় পশুর হাট বসানো যাবে না।

(দুই) ইজারাদারের হাট বসানোর আগে মহামারী প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন: মাস্ক, সাবান, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।  পরিষ্কার পানি সরবরাহ ও হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল সাবান/সাধারণ সাবানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এর পাশাপাশি নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

(তিন) কোরবানির হাটের সাথে জড়িত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও হাট কমিটির সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। হাট কমিটির সবার ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করাসহ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

(চার) কোরবানির গরু-ছাগলের হাটের সাথে জড়িত কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা দিতে হবে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের বিয়ষগুলো যেমন: মাস্কের সঠিক ব্যবহার, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধিসমূহ সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে।

(পাঁচ) মাস্ক ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেউ হাটের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে হাট কর্তৃপক্ষ চাইলে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহ করতে পারেন বা এর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারেন।

(ছয়) প্রতিটি হাটে সিটি কর্পোরেশনের ডিজিটাল পর্দায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করতে হবে।

(সাত) কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বসা পশুর হাটগুলোর নির্দিষ্ট প্রবেশ ও বাহির পথ করতে হবে।

(আট) কোরবানির হাটে পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই সাথে কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি করা যাবে না।

(নয়) প্রতিটি হাটে সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম গঠন করে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশাপাশি মেডিকেল টিমের কাছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার রাখা যেতে পারে, যাতে প্রয়োজনে হাটে আসা সন্দেহজনক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায়। এ ছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা করে রাখার জন্য প্রতিটি হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট (একটি আলাদা কক্ষ) রাখা যেতে পারে।

(দশ) প্রতিটি হাটে পশুর দূরত্ব এমনভাবে বজায় রাখতে হবে যেন ক্রেতারা কমপক্ষে তিন ফুট বা দুই হাত দূরত্বে থেকে কোরবানির পশু কিনতে পারেন।

(এগার) হাটে ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল আদায় কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

(বার) কোরবানির হাটে মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়ানোর সময় যেন কম হয়, সংশ্লিষ্টদের সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি লাইনে তিন ফুট বা কমপক্ষে দুই হাত দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিতে হবে।

(তের) সব পশু একত্রে হাটে প্রবেশ না করিয়ে, হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পশু প্রবেশ করাতে হবে।

(চৌদ্দ) হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করা সম্ভব, এমন সংখ্যক ক্রেতাকে হাটে প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া অবশিষ্ট ক্রেতারা হাটের বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন। এ ছাড়া একটি পশু কেনার জন্য এক বা দুই জনের বেশি ক্রেতা হাটে প্রবেশ করবেন না।

(পনের) অনলাইনে পশু বেচা-কেনার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা যেতে পারে।

(ষোল) স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে সব কাজ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে, আগামী ১০ জুলাই দেশে ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। 

কোরবানির ঈদকে ঘিরে এ বছর সারা দেশে ৫ হাজার ৪০৭টি কোরবানির হাট বসবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।